Contain performance

Sunday, December 25, 2022

সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার এর একদিন

 যে মানুষ সমুদ্র দেখল না,সে এই পৃথিবীর বিশালতা সম্পর্কে ধারণা নিবে কেমন করে। নশ্বর এই পৃথিবীতে মানুষের বিচরণ ক্ষীনকাল।পৃথিবীর ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে আছে কত সৌন্দর্য, ঘর থেকে বেড়িয়ে দেখলে মুগ্ধ নয়নযুগল। 


কক্সবাজার বাজার সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ সৈকত। প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য বহন করে যাচ্ছে সৃষ্টি লগ্ন থেকে। সমুদ্র তার বিশলতা দিয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্ম মানুষকে আকৃষ্ট করছে নিজের দিকে। বিশাল জলরাশী আর গর্জন তোলা ঢেউ মুহূর্তে আপনার মনকে সতেজ করে দিবে।

Swapnabaaz

সমুদ্রের গর্জন শুনতে শুনতে বিকেলে একটু সতেজ হাওয়া আপনাকে দিতে পারে নব নতুনত্ব নতুন প্রাণ সঞ্চার। কর্ম ব্যস্ত জীবনে একঘেয়ে জীবনে বোরিং ফিল করছেন, কোন কিছুতেই যেন আপনার মনে স্থিতিশীলতা নেই। মন যেন কোথায় হারিয়ে যায় বাড়ে বার,এমনি বিষন্নতা কাটিয়ে তুলতে চলে যান প্রকৃতির কাছে, প্রকৃতি পারবে আপনাকে পূর্নতা দিতে।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি আপনি কৃত্রিম আরও সুন্দর মন-মুগ্ধকর অপরুপ কারুকাজ দেখতে পারবে হরহামেশেই।

কক্সবাজার বাজার না আসলে আপনি কখনো বুঝতে পারবেন না,সমুদ্রের জলে কতটা প্রশান্তির ছোঁয় লুকিয়ে আছে। 

বিশাল জলরাশী ধেয়ে আসবে, আপনাকে মুহূর্তে তীরে ঠেলে দিবে। গর্জন তোলা ঢেউ আসরে পরবে আপনার গায়ে।লোনা পানির জলচুবানি আপনাকে দেখাবে নতুন এক পৃথিবী, যে পৃথিবী এতদিন আপনার কল্পনা ছিল এখন তা বাস্তব। 

বাংলাদেশের পর্যটন এলাকা গুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের পর্যটন এলাকা গুলো অন্যতম ও প্রধান। 

কক্সবাজার লাবনী বিচ, সুগন্ধা বিচ,কলাতলী বিচ,ঝাউবন,বার্মিজ মার্কেট, ঝিনুক মার্কেট এগুলো পর্যটকদের জন্য প্রধান আকর্ষণ।  তবে আপনার হাতে পর্যাপ্ত সময় থাকলে সাথে মহেশখালী, হিমছড়ি, দরিয়া নগর, ইনানি বিচ, মেরিন ডইভ রোড,পাটুয়ার টেক ভ্রমণ করে আসতে পারেন। 

ভ্রমণ অনেক ভাবে করা যায়,দলগত ভাবে,পারিবারিক ভাবে আবার একলা। চাইলে যেকোনো একটা ট্যুর গ্রুপের সাথে ও যেতে পারবেন। 

তবে একলা ভ্রমণের চাইতে আমার কাছে দলগত ভ্রমণ একটু আনন্দের ও সাশ্রয়ী মনে হয়।

কোথায় কখন গেলে আপনি ফুল ভিউ দেখতে পারবেন সেটা আপনার জানা না থাকলে আমার মতে কোন একটা গ্রুপের সাথে গেলেই হয়তো সঠিক সময়ে সঠিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।

একটা কথা না বললেই নয়।  বাংলাদেশে যেমন সর্বত্র অসংখ্য পর্যটন এলাকা আছে, তেমনি এগুলো ঘিরে মানুষের ব্যবসাও আছে। 

আপনি যেখানে যাবেন সেখানকার সমন্ধে পূর্ব ধারণা না থাকলে আপনার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা তিক্ততা ছাড়া আর কিছুই হবে না। 


কক্সবাজার ট্যুরটা আসলে একদিনের ট্যুর না,সময় নিয়ে দিতে হয়।৩-৪ দিন সময় নিয়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এর ভ্রমণ হলে তবে আপনি কিছু একটা অনুভূতি পাবেন বলে আশা করি। চোখে দেখে বাড়ি ফিরা আর প্রকৃতির সৌন্দর্য নিবিড় ভাবে দর্শন করা ও প্রকৃতির খেয়ালি পনা বুঝা,প্রকৃতির রহস্য ভেদ করা এক কথা নয়।

আপনি প্রকৃতির সাথে মিতালি গড়তে যতবেশি সময় দিবেন ততই আপনি প্রকৃতির উদারতা খুঁজে পাবেন।

এই লম্বা ট্যুর শেষ করতে আপনাকে অবশ্যই কক্সবাজার থাকতে হবে।

ভাবছেন কোথায় থাকবেন, কক্সবাজার সৈকতের আশেপাশে অসংখ্য রিসোর্ট, হোটেল মোটেল রয়েছে। আপনি চাইলে আপনার পছন্দের ও বাজেটের মধ্যে থাকার ব্যবস্থা করে নিতে পারেন। এমনিতেই সারা বছর কক্সবাজার পর্যটকদের আনাগোনা থাকে। তবে বিশেষ কিছু সময় ও সিজনে কক্সবাজার প্রচুর দর্শনার্থীদের দেখা যায়।

বাংলাদেশের ভৌগোলিক আবহাওয়া অনুযায়ী ডিসেম্বর, জানুয়ারী, ফেব্রুয়ারিতে সবচেয়ে বেশি মানুষ ঘুরতে বের হয়।

এক কথায় এটাকে ভ্রমণের সিজন বলা হয়ে থাকে।

তার উপর শুক্রবার একটু বেশি চাপ থাকে।

১৬ ই ডিসেম্বর, বড়দিন,থার্টি ফাস্ট নাইট,১৪ ই ফেব্রুয়ারী, পহেলা বৈশাখ সহ বছরে দুই ঈদে কক্সবাজার পর্যটকদের ঢল নামে। এই সময়টাতে ভ্রমণে আসলে স্বাভাবিক এর তুলনায় খরচ অনেক বেড়ে যাবে।

তবে বিশেষ দিন ছাড়া আপনি কক্সবাজার বেড়াতে গেলে ১০০০-১২০০ টাকায় মোটামুটি ভাল মানের রুম পাবেন থাকার জন্য। 

আর যারা বাজেট হিসাব করেন না তাদের জন্য তো কক্সবাজার বিলাসবহুল আয়েশ করার জায়গা। তবে যেখানে থাকবেন নিজে দর দাম করে হোটেল নিবেন, কোন অটো ড্রাইভার, রিক্সার ড্রাইভার এর কথায় রুম নিবেন না।

এরা দালাল, দালালি করে আপনাকে ঠকাবে। খাবারের বেলাতেও সেইম কন্ডিশন। আপনি খুব বেশি বিলাসী না হলে দর দাম ঠিক করে খাবার অর্ডার করতে পারেন। 

বাংলাদেশের পর্যটন এলাকা গুলোতে কখন দাম না জেনে কোন কিছু না কেনাই সবচেয়ে উত্তম কাজ।

যাদের বাজেট ট্যুর তাদের জন মোটামুটি মানের খাবার প্যাকেজ ১২০-১৫০ টাকায় হয়ে যাবে। তবে আপনাকে খুঁজ নিয়ে জেনে নিতে হবে।

যদি বিশেষ দিনগুলোতে যান,পর্যটক বেশি থাকে তবে সিচুয়েশন পরিবর্তন হবে নিশ্চিত জেনে নিয়ে বের হবেন। 

যারা বাজেট হিসাব করে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ঘুরে আসতে চান তাদের জন্য একলা বা শুধু পরিবার নিয়ে না গিয়ে কোন একটা ট্যুর গ্রুপের সাথে গেলেই ভালো হবে।

খরচ যেমন লিমিট এর কোটায় থাকবে,আপনার প্যারা গুলো ট্রাভেল গ্রুপ দেখবে। আপনি শুধু মন খুলে ঘুরে বেড়াবেন। তবে ট্রাভেল গ্রুপ এর সাথে ট্যুর কনফার্ম করার পূর্বে বিস্তারিত জেনে নিবেন। কম টাকায় চোখ ধাধানো অফার না দেখে হিডেন চার্জ আছে কিনা দেখে নিবেন। অযথা না বুঝে চলে গেলেন পরে মনকষাকষি করে আপনার ট্যুরটাই মাটি হয়ে যেতে পারে। 

তেমনি একটা ট্রাভেল গ্রুপ swapnabaaz BD Travels  স্বপ্নবাজ এর সাথে আমাদের এবারের কক্সবাজার ট্যুরটা ছিল। 

একেবারে কম বাজেট এর ভিতর সুন্দর একটা ট্যুর শেষ করলাম। লো বাজেট এর তুলনায় স্বপ্নবাজ এর সার্ভিস আসলেই প্রশংসার দাবিদার। 

সর্বোপরি বলবো আপনার ভ্রমণ কেমন হবে অনেক অংশে নির্ভর করে আপনার সিদ্ধান্তের উপর। শুনতে খারাপ লাগলেও সত্যি কথা এটাই কক্সবাজার ট্যুরটা আমাদের মতন সাধারণ মানুষের জন্য নয়। তূলনামূলক একটু ব্যয়বহুল ট্যুর।আপনি সমুদ্রের ছোঁয় নিবেন তার জন্য তো কষ্ট ও খরচা লাগবে তা মেনেই আপনি যাবেন। ভ্রমন কোন অহেতুক খরচ নয় নিজের জন্য বিনিয়োগ, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বিনিয়োগ। আপনি কখনো সমুদ্র দেখন নাই তাহলে আপনার পরবর্তী প্রজন্ম কিভাবে দেখবে। আপনি সমুদ্র দেখলে আপনার পরবর্তী প্রজন্ম মহাসমুদ্র দেখার চ্যালেঞ্জ নিবে।

আমার দেশ আমার অহংকার 

আমার দেশ আমার সৌন্দর্য, মন ভরে সৌন্দর্য উপভোগ কটুন।পরবর্তী প্রজন্মের জন্য পরিবেশ ঠিক রাখুন।  ঘুরতে যান ভালো কথা যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলে প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করবেন না। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় পর্যটন স্থান গুলো আমাদের জাতীয় সম্পদ। 

1 comment:

  1. কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বার বার যেতে ইচ্ছে করে

    ReplyDelete

Featured Post

লালাখাল নৈসর্গিক সৌন্দর্যময় এক পর্যটন কেন্দ্র

  লালাখালঃ লালাখাল সিলেট শহর থেকে প্রায় ৩৫ কি.মি দূরে অবস্থিত।  একটি পর্যটন কেন্দ্র। জৈন্তাপুর পুর উপজেলায় একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। ভারত...

Popular Contain