Contain performance

Thursday, December 8, 2022

সীতাকুণ্ড, চন্দ্রনাথ পাহাড় ও নাপিত্তাছড়া ট্রেইল

 নাপিত্তাছড়া ট্রেইলঃ





কর্ম ব্যস্ত জীবনের গ্লানি মুছে নতুনত্বের দম নিতে এবারের আয়োজন ছিল দূর্গম পাহাড়ের ঝিরিপথে ঝর্ণা ধারায়।


সীতাকুণ্ড নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা অসংখ্য গিরিপথ, ঝিরি,আর দূর্গম পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে আডবেঞ্চর ও রোমাঞ্চকর একটা ট্রেইল.... 



ভ্রমণ পিয়াসীদের জন্য একদিনে ভ্রমণ হতে পারে "নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা" প্রথম সারির পছন্দ। 


নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা বাংলাদেশের চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের পাহাড়ে অবস্থিত একটি জলপ্রপাত। এখানে মূলত পাঁচটি ঝর্ণা রয়েছে ঝর্ণা। এগুলো হলো কুপিকাটাকুম, মিঠাছড়ি, বাঘবিয়ানী ঝর্ণা এবং বান্দরকুম বা বান্দরিছড়া। আর ঝর্ণাগুলোতে যাওয়ার যে ঝিরিপথ রয়েছে সেটাকে নাপিত্তাছড়া ট্রেইল বলে।


নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা ও চন্দ্রনাথ পাহাড়, আথবা খৈইয়াছড়া ও চন্দ্রনাথ পাহাড় একদিনের জন্য এবং বাজেট ট্যুর হিসাবে নিতে পারেন। এটা হবে লো বাজেট ট্যুর।

আমাদের যাওয়া আশা খাওয়া খরচ সহ জন প্রতি ১৫০০ খরচ হয়েছে। চাইলে এর থেকে আরও কমেও একদিনে নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা ও চন্দ্রনাথ পাহাড় ঘুরে আস্তে পারবেন।


কখন যাবেন

ঝর্ণায় যাবার সবচেয়ে ভাল সময় বর্ষাকাল। তখন ঝর্ণা গুলোতে প্রচুর পানি থাকে । তবে একেবারে ভরা বর্ষায় না যাওয়াটাই উত্তম। ভরা বর্ষায় পাহাড়ি পথগুলো বেশি পিচ্ছিল ও ঝুকিময় হয়। তাই বর্ষায় ঘুরতে গেলে সেই ব্যাপারে সাবধান থাকবেন। বর্ষার শুরুতে অথবা বর্ষার শেষের দিকে গেলে সব চেয়ে ভাল হয়। সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর মাস গুলো ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত। এছাড়া বছরের যে কোন সময় যেতে পারেন এই ট্রেইল গুলোতে।


কিভাবে যাবেনঃ

দেশের যেখান থেকেই আসুন এই ট্রেইলে যেতে প্রথমে আপনাকে চট্রগ্রামের মিরসরাই এর নয় দুয়ারী বাজার আসতে হবে। নয় দুয়ারী বাজার থেকে পায়ে হেটে গ্রামিন পথ ধরে ৩৫ – ৪০ হেটে নাপিত্তাছড়া ঝর্ণার প্রবেশ পথে যাবেন। একদন সোজা সহজ রাস্তা ,হাটতে হাটতে স্থানীয় যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেও ঝর্ণার রাস্তা দেখিয়ে দিবে। আপনি চাইলে নয় দুয়ারী থেকে একজন গাইড নিয়ে নিতে পারবেন। ৩০০ – ৪০০ টাকা নিবে। গাইড আপনাকে পুরো ট্রেইল ঘুরিয়ে দেখাবে। পুরো ট্রেইল হেঁটে দেখতে আপনার ৪-৫ ঘন্টা সময় লাগবে,তবে সময় আনেকটা নির্ভর করবে আপনি পাহাড়ি ও ঝিরিতে হাটতে কতটুকু অভ্যস্ত আছেন তার উপর।


টিকেট ফিঃ

নাপিত্তাছড়া ট্রেইল এ প্রবেশ করতে এখন জন প্রতি ২০ টাকা দিতে হয়। সাথে গ্রুপের কতজন সদস্য আছে তা এন্ট্রি করাতে হয়।


ঢাকা থেকে কিভাবে যাবেন।

ঢাকা থেকে বাসে করে গেলে, ঢাকার যে কোন জায়গা থেকে চট্রগ্রাম গামী যে কোন বাসে করে নাপিত্তাছড়া যেতে পারবেন। হানিফ,শ্যমলি,সৌদিয়া, এস আলম, ইউনিক, ঈগল সহ বেশ কিছু পরিবহন নন এসি বাস ও এসি বাসে ভিতরে সৌদিয়া, সোহাগ, টি আর সহ বেশ কিছু পরিবহন আছে। বাস কাউন্টার গেলে খুঁজ নিলেই হবে। গাড়িতে এসে নয় দুয়ারী বাজারে রসে নেমে গেলেই হবে। আগে থেকে গাড়ির সুপারভাইজার কে বলে রাখলেই হবে, আপনাকে নামিয়ে দিবে।


ঢাকা থেকে ট্রেনে যেতে চাইলে ও যেতে পারবেন। কমলাপুর থেকে আন্তঃনগর ট্রেনে রাত ০৯.২০ এর ট্রেনে সীতাকুন্ড কুমিরা ষ্টেশনে নেমে যাবেন। ভাড়া ৩৪৫ টাকা জন প্রতি। কুমিরা স্টেশনে ভোর ৫ টায় নামিয়ে দিবে । স্টেশন থেকে হাতের ডানে নেমে একটু সামনে গিয়ে। সিএনজি /বাস/ লেগুনা করে নয় দুয়ারী যাবেন। চাইলে ট্রেনে ক্রে ফেনী ষ্টেশনে নেমে , সেখন থেকে মহিপাল যাবেন। মহিপাল থেকে লোকাল বাসে মিরসরাই নয় দুয়ারী আসবেন।


নয়দুয়ারি বাজার থেকে ট্রইল ঘুরে দেখার জন্য গাইড হিসাবে স্থানীয় কাউকে নিতে পারেন।

আপনাদের যদি ট্রেইল সম্পর্কে ভাল ধারনা থাকে তাহলে নিজেরাই ট্রেকিং করতে পারবেন। প্রয়োজনে স্থানীয় কাউকে জিজ্ঞেস করলে পথ দেখিয়ে দিবে। একেবারে নতুন হলে আর পুরো ট্রেইল কভার করতে চান তাহলে সাথে গাইড নিয়ে নেওয়াই ভালো হবে।


নয় দুয়ারী  হতে পূর্ব দিকের রাস্তা ধরে হাটলে রেল লাইন পাড় হয়ে আরও কিছুদূর হেঁটে গেলে নাপিত্তাছড়া পাড়ার দেখে পাবেন।


কোথায় খাবেনঃ

নয় দুয়ারী বাজারে তেমন কোন ভালো খাবারের হোটেল নেই। তবে ট্রেইল এর যাবার পথে স্থানীয় পাড়ায় বেশ কিছু খাবার হোটেল দেখতে পাবেন। যে কোন একটাতে যাবার সময় যদি কি কি খাবেন অর্ডার করে যান তাহলে খাবার রান্না করে রাখবে। খাবারের দাম তুলনামূলক কমই আছে। তবুও দাম যাচাই করে নিবেন। জন প্রতি ১২০ – ১৪০ টাকা পড়বে।


কোথায় থাকবেনঃ

যেহেতু এটা একদিনের ট্যুর সন্ধ্যায় ফিরতে পারবেন। থাকার জন্য নয় দুয়ারী তেমন ভালো কোন ব্যাবস্থা নেই, তবে অনেকে নাপিত্তাচড়া পাড়ায় সেখানকার স্থানীয়দের সাথে থাকার ব্যাবস্থা করে থাকে। থাকার প্রয়োজন হলে আপনাকে চলে যেতে হবে সীতাকুন্ড বাজারে। সেখনে বেশ কিছু আবাসিক হোটেল আছে। আরও ভালো জায়গাতে থাকতে চাইলে চট্রগ্রাম ভাটিয়ারী বা চট্রগ্রাম শহরে চলে যেতে হবে।


সতর্কতা ও টিপসঃ

★যেহেতু প্রায় পুরো পথই পাহাড়ি ও ঝিরি তাই ভাল মানের গ্রিপসহ জুতা পরে ট্রেকিং করা সুবিধাজনক।


★পাথুরে রাস্তা পিচ্ছিল থাকে, তাই সেইদিক সতর্ক থাকা উচিৎ।

★হাতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে এই ট্রেইলে রওনা হওয়া ভালো।

★অতি বর্ষায় ঝিরিতে অনেক পানি থাকে তাই সেই ব্যাপারে সাবধান থাকা ভালো।

★সাথে প্রাথমিক চিকিৎসার ঔষধ রাখা ভালো।

★স্থানীয় মানুষের সাথে ভালো আচরণ করবেন।

★ছোট বাচ্চা ও বয়স্ক কাউকে নিয়ে এই ট্রেইলে না যাওয়াই ভালো।

★সকল প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়িয়ে চলুন।

★ট্রেইলে যাত্রা করার সময় সাথে ব্যাগ বহন না করাই উত্তম হবে, সাথে লাঠি ব্যবহার করুন।


Swapanabaaz BDTravels এর সাথে থাকুন ভ্রমণের সকল তথ্য নিন। কম বাজেটে ঘুরে আসুন গ্রুপের সাথে। সময় গুলো কে সৃতির পাতার আটকে রাখুন Swapnabaaz BD Travls এর সাথে।

1 comment:

  1. এই ট্রেইলে যাবেন নাকি আবার

    ReplyDelete

Featured Post

লালাখাল নৈসর্গিক সৌন্দর্যময় এক পর্যটন কেন্দ্র

  লালাখালঃ লালাখাল সিলেট শহর থেকে প্রায় ৩৫ কি.মি দূরে অবস্থিত।  একটি পর্যটন কেন্দ্র। জৈন্তাপুর পুর উপজেলায় একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। ভারত...

Popular Contain