বান্দরবন যতগুলো পর্যটন স্পষ্ট আছে, সেগুলোর মধ্যে নীলাচল সবচেয়ে বেশি সুন্দর সম্ভবত। এই পাহাড় থেকে এক নজরে দেখে নিতে পারেন বান্দরবন শহরটা। এখান থেকে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় দেখতে পারবেন। নীলাচল পাহাড়ি এলাকাটি অনেকেই স্বর্গভূমি বলে থাকেন।
নীলাচলঃ
নীলাচল তার পূর্ণ রুপ ধারণ করে সকালের মেঘের খেলা আর বিকেলের সূর্যাস্তের সময়। আপনি সূর্যাস্ত দেখতে চাইলে অবশ্যই আসতে হবে নীলাচলে। একি সাথে একটা আকাশে দুই রং দেখতে চাইলে সূর্য ডোবার আগেই আপনাকে থাকতে হবে নীলাচল। উপরে সাদা নীচে নীল রংয়ের আভা তাই টই জায়গার নাম নীলাচল। বান্দরবান শহর তেকে ৫ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২০০০ ফট উপরে টাইগার পাড়ায় পাহাড়ের উপরে নীলাচল অবস্থিত। নীলাচল অনেকের কাছে টাইগার হিল নামেও পরিচিত। আঁকাবাকা পাহাড়ি পথ,আকাশ, পাহাড় আর মেঘের অপূর্ব প্রকৃতিক সৌন্দর্যে বিমোহিত হতে সারাদিন থাকতে মন চাইবে নীলাচলে। নীলাচলে থাকার জন্য কয়েকটা বিশ্রামাগার ও আছে তবে রাতে থাকতে চাইলে থেকে যেতে পারবেন রিসোর্টে। মেঘের দেখা পেতে চাইলে খুব ভোরে চলে যেতে হবে নীলাচলে। পাখির ভোরের ডাকের সাথে দেখে নিতে পারেন বান্দরবন পুরো শহরটাকে।
মেঘ মুক্ত আকাশে নীলাচল থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এর দৃশ্য ও নীলাচল থেকে উপভোগ করতে পারেন। বিশেষ করে সূর্যাস্তের সময় নীলাচল এর দৃশ্য আপনাদের মনে স্বর্গীয় অনুভূতি এনে দিবে। নীলাচলে বর্ষা, শরৎ ও হেমন্ত এই ঋতুতেই মেঘের ছোঁয় পাবেন। পর্যটকদের জন্য নীলাচলে সম্প্রতি কিছু জায়গা তৈরি করা হয়েছে। নরলাচলের টিকিট ঘরের পাশে ঝুলন্ত নীলা থেকে শুরু করে ক্রমশ নিচের দিকে বেশ কিছু বিশ্রামাগার তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ভ্যালেন্টাইন ও নীহারিকা। এই জায়গাগুলো মূলত পাহাড়ের ঢালে ঢালে সাজানো হয়েছে। এগুলো একটা থেকে আরেকটা সম্পূর্ণ আলাদা। এখানে একেক জায়গা থেকে পাহাড়ের দৃশ্য একেক রকম দেখবেন। তবে মুল নীলাচলের সৌন্দর্য অনেক গুন বেশি। সেখান থেকে পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় সুন্দর ভাবে। নীলাচল পাহাড়ের একেবারে চুড়ায় পর্যটকদের জন্য রয়েছে কিছু পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। নীলাচল পাহাড়ের শিখরের চারপাশে রয়েছে মনোরম স্থাপনা শৈলীতে নির্মাণ করা এই কেন্দ্র গুলো।বর্ষা এবং বর্ষা পরবর্তী সময়ে এখানে চলে মেঘর খেলা। কিছু সময় পর পর দূর পাহাড় থেকে মেঘ ভেসে আসে নীলাচলের চূড়ায়। চারপাশ ঢেকে পেলে শীতল নরম পরশে। এখানকার বাড়তি আকর্ষণ হল এখানকার রিসোর্ট গুলো। নীলাচল স্কেপ রিসোর্ট। সাধারণত অতিথিদের জন্য সূর্যাস্ত পর্যন্ত খোলা এই জায়গা।
নীলাচল যাবার উপায়
ঢাকা থেকে বান্দরবন এসে নামতে হবে,বান্দরবন শহর থেকে সিএনজি, অটো,জীপ,চান্দের গাড়ি করে নীলাচল যেতে পারবেন। নীলাচল যাওয়া আসা ও অবস্থান করার উপর নির্ভর করে অটোগুলো ৭০০-১০০০ টাকা নিতে পারে। সিএনজি নিলে ১০০০-১২০০ টাকা। জীপে গেলে ১২০০-১৫০০ টাকার মতন, চান্দের গাড়ি নিলে ২০০০-২৫০০ টাকার মতন লাগতে পারে।
খাবেন কোথায়
আপনি যদি নীলাচ স্ক্যাপ রিসোর্ট এ রাত্রি যাপন করেন তবে রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ খাবারের ব্যবস্থা করে দিবে। একটিমাত্র রেস্টুরেন্টে রয়েছে ফরেস্ট হিল নামে,এছাড়া ভালো তেমন খাবার এর ব্যবস্থা নেই। প্রয়োজনে বান্দরবন যেতে হালকা কিছু খাবার সাথে নিতে পারেন অথবা নীলাচল থেকে ফিরে বান্দরবন এসে খেতে পারেন। বান্দরবন শহরে বেশ কিছু খাবার হোটেল রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য মেঘদূত ক্যাফে,তাজিং ডং ক্যাফে,ফুড প্লেস,রুপসী বাংলা, রি সং,কলাপাতা রেস্তোরাঁ অন্যতম।
থাকবেন কোথায়
নীলাচল থাকতে চাইলে নীলাচল স্কেপ রিসোর্টে তিনটি কটেজ থেকে আপনার জন্য বেছে নিতে পারেন। তবে নীলাচল স্কেপ রিসোর্ট এ থাকতে হলে আগে থেকে বুকিং দিয়ে কনফার্ম করে রাখতে হবে। প্রতিটি কটেজ এ দুটি করে রোম আছে, প্রতি রুমের ভাড়া ৩০০০ টাকা করে। তাছাড়া নীলাচল বান্দরবন শহরের কাছে হওয়ায় আপনি চাইলে বান্দরবন শহরে কোন হোটেল এ ও থাকতে পারেন।
মোঃ শওকত আলী
স্বপ্নবাজ বিডি ট্রাভেলস (ফাউন্ডার এডমিন)
সুন্দর জায়গা নীলাচল
ReplyDeleteনীলাচল বিকেল বেলা খুব ভালো লাগে
ReplyDelete