Contain performance

Monday, January 2, 2023

চন্দ্রনাথ পাহাড়ে ট্রেকিং

 চট্রগাম বিভাগের একটি উপজেলার নাম সীতাকুন্ড যা পর্যটকদে কাছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ।পাহাড়, ঝর্ণা , ঝিরি, মেঘ,কি নেই সীতাকুণ্ডে। আর এই কারনেই সারা বছর অসংখ্য পর্যটকদের ছুটে আসতে দেখা যায় সীতাকুণ্ডে। ক্যাম্পিং করা,ট্রেইল করা সবি সম্ভব এখানে। কেউ কেউ আবার দিনে এসে দিনে গিয়ে গা ভিজিয়ে আছে ঝর্ণার স্রোতে। সীতাকুণ্ডের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল ঢাকা,কুমিল্লা, চট্রগাম,ফেনী থেকে খুব সহজে ডে ট্যুর দিয়ে আশা যায়। সীতাকুণ্ড ও তার আশেপাশে সবগুলো দর্শনীয় স্থান ঘুরে আসতে দুই-তিন দিনের সময় লেগে যেতে পারে। সেখানে থেকে সব কয়েকটি স্পর্ট ঘুরে দেখতে পারেন,চাইলে একদিনের জন্য ও ট্যুর দিতে পারেন। 

সীতাকুণ্ডে যে সকল দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখতে পারেনঃ

চন্দ্রনাথ পাহাড় 

নীলাচল,বান্দরবন

মহামায়া লেক

গুলিয়াখালী বিচ/সমুদ্র 

কুমিরা ঘাট

বাঁশ বাড়িয়া সমুদ্র সৈকত 

খৈয়াছড়া ঝর্ণা 

নাপিত্তাছড়া ট্রেইল/ঝর্ণা 

কমলদহ ট্রেইল

হরিণমারা হাটুভাঙ্গা

ছাগলকান্দা ঝর্ণা 

সহস্রধারা ঝর্ণা 

কুমারীকুন্ড

সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক

 চন্দ্রনাথ পাহাড়ঃ 

চন্দ্রনাথ পাহাড় সীতাকুণ্ড বাজার থেকে পূর্ব দিকে ৪ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত।



 চন্দ্রনাথ পাহাড় দর্শনার্থীদের কাছে ট্রেকিং এর জন বেশ জনপ্রিয়। চন্দ্রনাথ পাহাড় সমতল ভূমি থেকে প্রায় ১০৫০ ফিট উচ্চতায়। চন্দ্রনাথ পাহাড়ে উঠতে দুইটা সিরি/রাস্তা আছে, ডান দিকের রাস্তায় সিরি আছে। বামের রাস্তাটা পুরোটাই পাহাড়ি রাস্তা। সিড়ি দিয়ে উঠতে গেলে সিড়ির অনেক অংশ ভাঙ্গা আছে। বাঁয়ের দিকে রাস্তায় তূলনামূলক উপরে উঠতে সহজ। ডান দিকের সিড়ি বেয়ে নামতে সহজ। আপনি চাইলে আপনার ইচ্ছে মতন পথ ব্যবহার করে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে ট্রেইল করতে পারেন। প্রায় ১ ঘন্টা ট্রেইল/ট্রেকিং শেষ করে চন্দ্রনাথ এর চূড়ায় উঠতে পারেন। চন্দ্রনাথ পাহাড় দুইটি চূড়া,দুটো চূড়ায় দুইটি মন্দির দেখতে পাবেন। প্রথম চূড়া তূলনামূলক অনেকটা নিচে সর্বোচ্চ চূড়া থেকে। প্রথম চূড়ায় যে মন্দিরের দেখা পাবেন তার নাম শ্রী শ্রী বিরুপাক্ষ মন্দির।  


প্রতি বছর এই মন্দিরে শিবরাত্রি তথা শিবর্তদশী তিথিতে বিশেষ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পূজাকে কেন্দ্র করে সীতাকুণ্ডে বিশেষ মেলা বসে থাকে। চন্দ্রনাথ পাহাড় এর আশেপাশে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের প্রতি বছর বাংলা ফাল্গুন মাসে(ফেব্রুয়ারী - মার্চ) বিশাল বড় মেলার আয়োজন করে থাকে। সেখানে বাংলাদেশ, ভারত, ভূটান,মালদ্বীপ, নেপাল,থাইল্যান্ড সহ অনেক দেশের সাধু এবং নারী -পুরুষ যোগদান করে থাকে। চন্দ্রনাথ পাহাড়ের একেবার চূড়ায় যে মন্দির দেখতে পাবেন সেটাই হল চন্দ্রনাথ মন্দির। একেবারে চূড়ায় দাঁড়িয়ে দেখতে পাবেন মনোমুগ্ধকর এক দৃশ্য, নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।  দিগন্ত জুড়ে সবুজের সমারোহ যা আপনার দীর্ঘ সময়ের ট্রেকিং করার কষ্ট নিমেষেই বাষ্পীভূত করে দিবে।

কখন যাবেনঃ

এমনিতেই চন্দ্রনাথ পাহাড়ে সারা বছর পর্যটকদের আনাগোনা থাকে। একেকটা সময় একেক ধরনের সৌন্দর্য খুঁজে নিতে হবে। বাংলাদেশের ঋতু বৈচিত্র্যের সাথে প্রকৃতির ও একটা পরিবর্তন আছে। আপনি যদি সারি সারি মেঘের স্পর্শ ও ভেসে বেড়ানোর দৃশ্য দেখতে ইচ্ছে হয় তবে আপনাকে জুন - অক্টোবর মাসে যেতে হবে। খুব ভোরে ট্রেকিং করতে পারলে আপনি মেঘের ভেসে যাওয়া দৃশ্য দেখতে পাবেন। যতটা সম্ভব ভোর বেলাতে উঠে যাবেন, পাখির কলতান ও মেঘের ছোঁয় মিলে আপনার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা বাড়িয়ে দিবে শতগুণে। 

কিভাবে যাবেনঃ

ঢাকা থেকে বাসে করে গেলে সীতাকুণ্ড বাজারে নেমে যাবেন। বাজার থেকে সিএনজি করে চন্দ্রনাথ পাহাড় এর প্রবেশ পথ পর্যন্ত যেতে পারবেন।  সিএনজি ভাড়া জনপ্রতি ২০-২৫ টাকা নিতে পারে।

ট্রেনে গেলে চট্টগ্রামগামী ট্রেনে করে কুমিরা রেলস্টেশনে নেমে,সেখান থেকে সিএনজি করে চন্দ্রনাথ পাহাড় এর প্রবেশ পথ পর্যন্ত যেতে পারবেন।  ভাড়া জনপ্রতি ৫০-৬০ টাকা।৫ জন মিলে রিজার্ভ নিলে ২৫০-৩০০ টাকা নিতে পারে।

তবে যেহেতু পর্যটন এলাকা তাই দরদাম ঠিক করে নেওয়াই বুদ্ধিমান এর কাজ হবে।

কোথায় খাবেনঃ

চন্দ্রনাথ পাহাড় এর আশেপাশে তেমন ভাল খাবার হোটেল নেই,দুটি খাবারের দোকান আছে তবে তেমন একটা ভালো মানের নয়। তাই আপনি চাইলে সীতাকুণ্ড বাজার থেকে নাস্তা করে যেতে পারেন, ফিরার পথে দুপুরে সীতাকুণ্ড বাজার এসে দুপুরের খাবার খেতে পারেন। 

কোথায় থাকবেনঃ

চন্দ্রনাথ পাহাড়ের আশেপাশে থাকার তেমন কোন ব্যবস্থা নেই।  আপনি সেখানে থাকতে চাইলে সীতাকুণ্ড বাজারে বেশ কিছু হোটেল আছে সেখানে থাকতে পারবেন।  তবে আপনি চাইলে দিনে গিয়ে দিনে এসে ও চন্দ্রনাথ পাহাড় ভ্রমণ করতে পারেন। 

সতর্কতাঃ

যেহেতু পাহাড়ি ট্রেকিং তাই সাথের ব্যাগ যতটা সম্ভব হালকা রাখুন, বেশি ওজন হলে আপনার ট্রেকিং করতে কষ্ট হবে।

√উপরে উঠতে সাথে পানি নিয়ে উঠুন, প্রয়োজনে খাবার স্যালাইন সাথে নিন।

√হালকা খাবার নিতে পারেন 

√পাহাড়ি রাস্তা ভেজা পিচ্ছিল কাদামক্ত থাকে তাই ভালো মানের ট্রেকিং জুতা বা পায়ে এংলেট পরে ট্রেকিং করুন।

√পাহাড়ের উপরে দোকানে সব কিছুর দাম বেশি তাই দরদাম করেই কিছু কিনুন।

√স্থানীয়দের সাথে ভালো আচরণ করুন। 

√পরিবেশ এর ক্ষতি হয় এমন সব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকুন

আরও দেখুন 

নাপিত্তাছড়া ট্রেইল

কুমিরা ঘাট



স্বপ্নবাজ বিডি ট্রাভেলস 

মোঃ শওকত আলী (ফাউন্ডার এডমিন)


2 comments:

  1. চন্দ্রনাথ অনেক কষ্ট করে উঠা লাগে

    ReplyDelete

Featured Post

লালাখাল নৈসর্গিক সৌন্দর্যময় এক পর্যটন কেন্দ্র

  লালাখালঃ লালাখাল সিলেট শহর থেকে প্রায় ৩৫ কি.মি দূরে অবস্থিত।  একটি পর্যটন কেন্দ্র। জৈন্তাপুর পুর উপজেলায় একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। ভারত...

Popular Contain