Contain performance

Tuesday, January 10, 2023

নীলগিরি, বান্দরবন ভ্রমণ

 পার্বত্য জেলার মধ্যে বান্দরবান একটি জেলা যার পূর্ব দিকে মায়ানমার, দক্ষিণ-পশ্চিম এ কক্সবাজার এবং উত্তর দিকে রাঙামাটি।  এর উত্তর - পশ্চিমে চট্টগ্রাম। নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সাজানো বান্দরবান। 

আজকে আমরা বান্দরবানের দর্শনীয় স্থান নীলগিরি  সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করবো।

নীলগিরিঃ



নীলগিরি বান্দরবান থেকেও অধিক পরিচিত সকালের কাছে। নীলগিরি হচ্ছে "বাংলার দার্জিলিং" নাম খ্যাত স্থান,চোখ ধাধানো সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে চলে আসতে হবে বান্দরবান সদর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে ২২০০ ফুট উচ্চতার পাহাড়ে। এখানে আসলে দেখতে পাবেন মেঘেদর লুকোচুরি, তাই মেঘ ছুঁতে চাইলে আপনাকে সমতল সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ২২০০ ফুট উপরে চলে আসতে হবে। বাংলাদেশের পর্যটন কেন্দ্র এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর হলো নীলগিরি। সেনাবাহিনী দ্বারা পরিচালিত হয় নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র। যেহেতু সেনাবাহিনীর পরিচালনায় স্পষ্ট তাই নিরাপত্তা নিয়ে কোন শংঙ্কা নেই। আকাশ পরিস্কার থাকলে আপনি বগালেক,কেওক্রাডং,কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত সাথে চট্টগ্রাম বন্দর ও সাঙ্গু নদী দেখতে পারবেন । নীলগিরির কাছেই রয়েছে আদিবাসী গোষ্ঠীর গ্রাম। আপনার সময় ও ইচ্ছে থাকলে জেনে নিতে পারেন তাদের জীবনধারা ও সংস্কৃতি সমন্ধে । সবুজ পাহাড়ি পরিবেশ আর মেঘের লুকোচুরি আপনাকে বিমোহিত করে রাখবে প্রতিটি মূহুর্ত।

কখন যাবেন 

বছরের যে কোন সময়ই যেতে পারবেন নীলগিরি ভ্রমণে। তবে নীলগিরি একেক সময় একেক রুপের সমাহার, ঋতু ভেদে নীলগিরি তার রুপ উপস্থাপন করে ভিন্ন ভিন্ন রুপে। সকালে মেঘের ভেলা আর সূর্যোদয়ে সোনালী আলোর খেলা। বিকেলে সুর্যাস্ত কিংবা রাতের জ্যোৎস্না রাতের মায়াময় দৃশ্য ও চারপাশের প্রকৃতি মিলে ভ্রমণ পিপাসুদের আকর্ষণ করে বার বার। সাধারণত বর্ষা, শরৎ ও হেমন্তে মেঘের ভেলায় লুকোচুরি খেলায় আকৃষ্ট হয় ভ্রমণ প্রেমিরা ভির জমায় নীলগিরিতে। বিশেষ করে শরৎ আর হেমন্তে দিগন্ত জুড়ে মেঘ আর নীল আকাশ মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। শীতের চাদরে মোড়ানো থাকে চারপাশ, এ যেন কল্পনার স্বপ্ন পুড়ির দৃশ্যপট।

যাবার উপায় 

নীলগিরি যেতে হলে প্রথমে আপনাকে বান্দরবন আসতে হবে। বান্দরবন থেকে নীলগিরি যেতে পারবেন চান্দের গাড়ি (জীপ),সিএনজি অথবা লোকাল বাসে করে। তবে সবচেয়ে ভালো হবে রিজার্ভ গাড়ি নিয়ে গেলে,এতে আপনি আশেপাশে আরও কিছু জায়গা দেখতে পারবেন। দিনে গিয়ে দিনে ফিরতে চাইলে বান্দরবন জীপ স্ট্যান্ড থেকে যাওয়া - আসা সহ রিজার্ভ গাড়ি নিতে পারেন। ৪৫০০-৫০০০ টাকা নিতে পারে।একটা চান্দের গাড়িতে ১৩-১৪ জন যাওয়া যাবে। চান্দের গাড়ি দিয়ে যেতে সময় লাগবে ৩-৪ ঘন্টার মতন। থানচি থেকে লোকাল ট্রান্সপোর্ট বাস ১ ঘন্টা পর পর বাস যায়। ভাড়া ১৫০ - ২০০ টাকার মতন লাগতে পারে। নীলগিরি যাবার পথে নিরাপত্তা জনিত কারণে সেনাক্যাম্পে পর্যটকদের নাম ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার এন্ট্রি করতে হয়। সাধারণত বিকেল ৫ টার পর নীলগিরির উদ্দেশ্য যেতে দেওয়া হয় না। তাই ভ্রমণ করার পূর্বে অবশ্যই সময়ের দিকে নজর রাখতে হবে। নীলগিরিতে প্রবেশ করার জন্য পর্যটকদের জনপ্রতি ৫০ টাকা টিকিট মূল্য নেওয়া হয়। গাড়ি পার্কিং এর জন্য আলাদা করে ৩০০ টাকা দিতে হবে। 

নীলগিরি ভ্রমণ পরিকল্পনা 



নীলগিরি যাবার পথে দেখতে পাবেন মিলনছড়ি ভিউ পয়েন্ট,শৈল প্রপাত ঝর্ণা, চিম্বুক পাহাড়, সাইরু হিল রিসোর্ট। গাড়ি রিজার্ভ করে নিলে যেতে যেতে এই স্পষ্ট গুলো ঘুরে দেখতে পারবেন। সেক্ষেত্রে গাড়ি রিজার্ভ করার পূর্বে অবশ্যই বলে নিবেন কোথায় কোথায় ঘুরবেন। তবে যদি মেঘ দেখতে চান তবে সকাল সকাল নীলগিরি চলে যেতে হবে। ফিরে আসার সময় চিম্বুক পাহাড় কিছু সময় কাটিয়ে তারপর শৈল প্রপাত কিছু সময় কাটিয়ে আসতে পারবেন। আর যাবার পথেই মিলনছড়া ভিউতে চেক পোস্ট এ নামার সময় সেখানকার মনোমুগ্ধকর পরিবেশে ও সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। ঘুরাঘুরি আসলে নির্ভর করে নিজস্ব ব্যাক্তি পছন্দের উপর নির্ভর করে। 

থাকবেন কোথায় 

নীলগিরি পর্যটন এলাকা আসলে সেনাবাহিনী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সেখানে কটেজ এ থাকার ব্যবস্থাও আছে। ছয়টি কটেজ এ রুম ভেদে ৬০০০-১০০০০ টাকা খরচ লাগতে পারে। তবে আপনি যদি নীলগিরি রিসোর্টে থাকতে চান তবে আগে থেকেই বুকিং কনফার্ম করে নিতে হবে। বুকিং কনফার্ম করতে সেনাবাহিনীর অফিসার পদে কোন কর্মকর্তার রেফারেন্স নিতে হবে। এই রিসোর্ট গুলো জনপ্রিয় হওয়ায় এখানে রুম পাওয়া অনেকটা কঠিন। তাই মাসখানেক আগে থেকেই বুকিং না করলে রিসোর্ট পাবেন না। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে। 

বেশির ভাগ পর্যটক বান্দরবন দিনে গিয়ে দিনেই ফিরে আছে। বান্দরবন বেশ কিছু হোটেল, রিসোর্ট, ও কর্টেজ রয়েছে। এই হোটেল ও রিসোর্ট গুলোর অবস্থান বান্দর এর আশেপাশে। 

কোথায় খাবেন 

খিদে পেলে খাবারের জন নীলগিরিতে হোটেল রয়েছে, মন চাইলে সেখানে পেট ভরে খেয়ে নিতে পারেন। নীলগিরিতে খেতে হলে আগেই খাবার অর্ডার করতে হবে। পের পুরে খেতে হলে ৩০০-৬০০ টাকার প্যাকেজ পাবেন। অথবা বান্দরবন ফিরে এসে খেয়ে নিতে পারেন। চাইলে যাবার সময় শুকনো খাবার সাথে নিতে পারেন। বান্দরবন খাবারের জন্য বেশ কিছু রেস্তোরাঁ রয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য  মেঘদূত ক্যাফে,তাজিং ডং ক্যাফে,ফুড প্লেস,রুপসী বাংলা, রি সং,কলাপাতা রেস্তোরাঁ অন্যতম।

নীলগিরি ভ্রমণ টিপস 

👉 জীপ গাড়ি ভাড়া করার জন্য সরাসরি বাস স্ট্যান্ডে চলে যান। দরকার হলে দরদাম করে ঠিক করুন।

👉শৈল প্রপাত বা চিম্বুক আদিবাসীদের তৈরি জিনিসপত্র কিনতে পারেন, তবে দরদাম ঠিক করে নিবেন। 

👉বান্দরবন থেকে নীলগিরি পুরোটা আঁকাবাকা পাহাড়ি রাস্তা তাই ভ্রমণে সাবধানতা অবলম্বন করুন। 

👉চান্দের গাড়িতে ছাদে চরতে যাবেন না।

👉শৈল প্রপাত ঝর্ণায় নামর সময় সাবধানে নামবেন, পাথর পিচ্ছিল থাকে।

👉আদিবাসীদের অসম্মান হয় এমন কিছু বলবেন না।

👉সম্ভব হলে নীলগিরিতে একটা রাত্রি থাকবেন, সময়টা স্বরণীয় হয়ে থাকবে। 

👉ভ্রমণের সময় জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি  সাথে রাখুন। 

👉কম করচে নীলগিরি ভ্রমণ করতে চাইলে অবশ্যই দলগত ভাবে ভ্রমণ করুন। 

মেঘলা পর্যটন কেন্দ্র

নীলাচল পর্যটন কেন্দ্র

1 comment:

  1. অপরুপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে চলে আসুন নীলগিরি

    ReplyDelete

Featured Post

লালাখাল নৈসর্গিক সৌন্দর্যময় এক পর্যটন কেন্দ্র

  লালাখালঃ লালাখাল সিলেট শহর থেকে প্রায় ৩৫ কি.মি দূরে অবস্থিত।  একটি পর্যটন কেন্দ্র। জৈন্তাপুর পুর উপজেলায় একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। ভারত...

Popular Contain