পাহাড়ের চুড়ায় দাড়িয়ে সারি সারি মেঘের ভেসে বেড়ানো দৃশ্য ও মেঘ এসে আপনাকে ভিজিয়ে দিয়ে যাবে হঠাৎ করে,বিষয়ট কেমন হবে ভাবুন তো? সাথে যদি প্রকৃতি ও আপন রুপে সাজে রঙিন হয়ে। প্রকৃতির সাথে মিতালি গড়তে গড়তে যদি দূর পাহাড়ের কোল ঘেঁষে প্রবাহিত স্রোতস্বীনি ঝর্ণা চোখে পরে তবে বিষয়টি হবে সোনায় সোহাগা বা ষোলকলা পূর্ণ।
এতক্ষন পাহাড়ি কন্যা বান্দরবান এর কথাই বলছিলাম, যেখানে পাহাড়, ঝর্ণা ও মেঘের দেখা মিলবে একসাথে। সাথে বাড়তি পাবেন প্রকৃতির নৈসর্গিক সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ।
পার্বত্য জেলার মধ্যে বান্দরবান একটি জেলা যার পূর্ব দিকে মায়ানমার, দক্ষিণ-পশ্চিম এ কক্সবাজার এবং উত্তর দিকে রাঙামাটি। এর উত্তর - পশ্চিমে চট্টগ্রাম। নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সাজানো বান্দরবান।
আজকে আমরা বান্দরবানের দর্শনীয় কিছু স্থান সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করবো।
নীলগিরিঃ
নীলগিরি বান্দরবান থেকেও অধিক পরিচিত সকালের কাছে। নীলগিরি হচ্ছে "বাংলার দার্জিলিং" নাম খ্যাত স্থান,চোখ ধাধানো সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে চলে আসতে হবে বান্দরবান সদর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে ২২০০ ফুট উচ্চতার পাহাড়ে। এখানে আসলে দেখতে পাবেন মেঘেদর লুকোচুরি, তাই মেঘ ছুঁতে চাইলে আপনাকে সমতল সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ২২০০ ফুট উপরে চলে আসতে হবে। বাংলাদেশের পর্যটন কেন্দ্র এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর হলো নীলগিরি। সেনাবাহিনী দ্বারা পরিচালিত হয় নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র। যেহেতু সেনাবাহিনীর পরিচালনায় স্পষ্ট তাই নিরাপত্তা নিয়ে কোন শংঙ্কা নেই। আকাশ পরিস্কার থাকলে আপনি বগালেক,কেওক্রাডং,কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত সাথে চট্টগ্রাম বন্দর ও সাঙ্গু নদী দেখতে পারবেন । নীলগিরির কাছেই রয়েছে আদিবাসী গোষ্ঠীর গ্রাম। আপনার সময় ও ইচ্ছে থাকলে জেনে নিতে পারেন তাদের জীবনধারা ও সংস্কৃতি সমন্ধে । সবুজ পাহাড়ি পরিবেশ আর মেঘের লুকোচুরি আপনাকে বিমোহিত করে রাখবে প্রতিটি মূহুর্ত।
নীলাচলঃ
নীলাচল তার পূর্ণ রুপ ধারণ করে সকালের মেঘের খেলা আর বিকেলের সূর্যাস্তের সময়। আপনি সূর্যাস্ত দেখতে চাইলে অবশ্যই আসতে হবে নীলাচলে। একি সাথে একটা আকাশে দুই রং দেখতে চাইলে সূর্য ডোবার আগেই আপনাকে থাকতে হবে নীলাচল। উপরে সাদা নীচে নীল রংয়ের আভা তাই টই জায়গার নাম নীলাচল। বান্দরবান শহর তেকে ৫ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২০০০ ফট উপরে টাইগার পাড়ায় পাহাড়ের উপরে নীলাচল অবস্থিত। নীলাচল অনেকের কাছে টাইগার হিল নামেও পরিচিত। আঁকাবাকা পাহাড়ি পথ,আকাশ, পাহাড় আর মেঘের অপূর্ব প্রকৃতিক সৌন্দর্যে বিমোহিত হতে সারাদিন থাকতে মন চাইবে নীলাচলে। নীলাচলে থাকার জন্য কয়েকটা বিশ্রামাগার ও আছে তবে রাতে থাকতে চাইলে থেকে যেতে পারবেন রিসোর্টে। মেঘের দেখা পেতে চাইলে খুব ভোরে চলে যেতে হবে নীলাচলে। পাখির ভোরের ডাকের সাথে দেখে নিতে পারেন বান্দরবন পুরো শহরটাকে।
থানচিঃ।
থানচি উপজেলার সৌন্দর্য বর্ণনা করে বোঝানোর জন্য লেখালেখি করে আসলে সম্ভব না। প্রকৃতির সৌন্দর্য না দেখলে বুঝা যায় না,এটা এমনই এক সৌন্দর্য যা আপনার দেহ মনকে প্রফুল্ল করে দিবে। বান্দরবন জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলার নাম থানচি। সাফা হাফং,নাফাখুম জলপ্রপাত, বড় পাথর বা রাজা পাথর, বাকলাই জলপ্রপাত, তিন্দু সহ অনেক দর্শনীয় স্থান এই থানচি উপজেলার অন্তর্গত। বান্দরবন থেকে থানচি যাওয়া যায় দুই ভাবে। বাস কিংবা জীপে (চান্দের গাড়ী) করে। বান্দরবন থানচি বাসস্ট্যান্ড থেকে একঘন্টা পর পর লোকাল বাস ছাড়ে,সেগুলো করে থানচি যেতে পারবেন। যেতে ৪-৫ ঘন্টা সময় লাগবে, ভাড়া জনপ্রতি ২০০-২৫০ টাকা নিতে পারে। আপনি চাইলে জীপ/চান্দের গাড়ি করে লোকালে অথবা চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করেও যেতে পারবেন। চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করলে ৬০০০-৬৫০০ টাকার মতন লাগতে পারে, একটা গাড়িতে ১৪ জন যেতে পারবেন। সময় লাগবে আনুমানিক ৩-৩.৫ ঘন্টা।
চিম্বুক পাহাড়ঃ
শৈল প্রপাতঃ
কেওক্রাডংঃ
মারায়ন তংঃ
ডিম পাহাড়ঃ
বগালেকঃ
মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রঃ
বান্দরবন যতগুলো পর্যটন স্পষ্ট আছে, সেগুলোর মধ্যে মেঘলা পর্যটন কেন্দ্র অনেক বেশি সুন্দর সম্ভবত।
বান্দরবন শহরের প্রবেশদ্বার - কেরানী হাট সড়কের পাশে মেঘলা পর্যটন কেন্দ্র অবস্থিত। মেঘলা পর্যটন কেন্দ্র বান্দরবন শহরে প্রবেশ করার ৫ কি.মি আগেই পেয়ে যাবেন। মেঘলা পর্যটন কেন্দ্র চিত্তবিনোদনের জন্য অনেক কিছু রয়েছে। চিড়িয়াখানা, শিশুপার্ক, ক্যাবল কার,সাফারি পার্ক,প্যাডেল বোট,উন্মুক্ত মঞ্চ, চা বাগান, মেঘলা ঝুলন্ত ব্রিজ সহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় এক স্পষ্ট। এখানকার সবুজ প্রকৃতি, লেকের স্বচ্ছ পানি আর পাহাড়ের চূড়ায় উঠে দেখতে পারবেন বান্দরবন শহরের নয়নাভিরাম অপরূপ সৌন্দর্য্যের খেলা। মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রটি গড়ে উঠেছে বেশ কিছু উচু নিচু পাহাড় বেষ্টনী দ্বারা একটি লেককে ঘিরে। ঘন সবুজ গাছপালা আর স্বচ্ছ লেকের পানি প্রতিনিয়ত প্রকৃতি প্রেমীদের নিয়ে যায় মনোরম পরিবেশে।
প্রবেশ মুল্যঃ
মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে জনপ্রতি প্রবেশ ফি ৫০/- এবং গাড়ি পাকিংয়ের জন্য ২০০-৩০০ টাকার মতন লাগবে।
কীভাবে যাবেনঃ
প্রথমে আপনাকে বান্দরবান শহরে যেতে হবে। ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন বান্দরবানের উদ্দেশ্যে কয়েকটি পরিবহন কোম্পানির গাড়ি ছেড়ে যায়।
চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান যেতে পারেন। বদ্দারহাট থেকে বান্দারবানের উদ্দেশে পূবালী ও পূর্বানী পরিবহনের বাস যায়। এরপর বান্দরবান বাস ষ্টেশন থেকে মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স যেতে লোকাল বাসে জনপ্রতি ১৫-২০ টাকা এবং টেক্সি রিজার্ভ ১৫০-২০০ টাকা, এবং ল্যান্ড ক্রোজার, ল্যান্ড রোভার ও চাঁদের গাড়ী ৫০-৬০০ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে।
কোথায় থাকবেন
মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে রয়েছে জেলা প্রশাসনের একটি সুন্দর রেস্ট হাউজ রয়েছে। যেখানে অবকাশ ভোগ করা যায় ভালভাবে। এখানে রাত্রিযাপনের জন্য চারটি কক্ষ রয়েছে। কেউ রাত্রি যাপন করলে আগে থেকে যোগাযোগ করে বুকিং কনফার্ম করে নিবেন।
বান্দরবানে অসংখ্য রিসোর্ট, হোটেল, মোটল এবং রেস্টহাউজ রয়েছে। যেখানে ৬০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় রাত্রিযাপন করতে পারবেন।
কোথায় খাবেনঃ
মেঘলা পর্যটন কেন্দ্র ঘুরতে গেলে আশেপাশে তেমন ভাল মানের কোন খাবার হোটেল নেই। তবে বান্দরবান শহরে বাস স্ট্যান্ডে গেলে খাবারের হোটেল পাবেন। কিছু কম খরচে খেতে হলে হোটেল নীল দিগন্ত ও হোটেল গাউশিয়া আছে। ভালো মানের খাবারের জন্য যেতে হবে হোটেল হিল ভিউ ও কলাপাতা রেস্টুরেন্ট।
মোঃ শওকত আলী
স্বপ্নবাজ বিডি ট্রাভেলস (ফাউন্ডার এডমিন)
আমিয়াখুমঃ
নাফাখুমঃ
নাফাখুমের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য
নাফাখুম কে বাংলার নায়াগ্রা ও বলা হয়ে থাকে। ঝর্ণা থেকে আসরে পরা পানির প্রচণ্ড আঘাতে ঝরনার চারপাশে অনেকটা স্থানজুড়ে সৃষ্টি করে ঘন কুয়াশা আর এই পানি প্রায় ৩০ ফুট ওপর থেকে আছড়ে পড়ে। নাফাখুম জলপ্রপাত এ সূর্যের আলো এই জলপ্রবাহের খেলায় সৃষ্টি করে রংধনু। চারদিকে বড় বড় পাহাড়। নদীতে ছড়ানো অজস্র পাথর। পাথরগুলো দেখলে মনে হবে যেন এক-একটি ভাস্কর্য। এমন দৃশ্য বান্দরবানের থানচি উপজেলার রেমাক্রির নাফাখুম জলপ্রপাতের প্রতিচ্ছবি। অনিন্দ্য সুন্দর এই জলপ্রপাতটি রেমাক্রি থেকে মাত্র ২.৫-৩ ঘন্টা পায়ে হাটার পথ দূরত্বে অবস্থিত। আপনি যদি আডবেঞ্চার প্রিয় হন প বান্দরবন ট্রেকিং করার ইচ্ছে থাকে, কিংবা দেখতে চান বান্দরবন এর গহীনে সবুজের অপরুপ সৌন্দর্য । আদিবাসীদের জীবন বৈচিত্র্য, সাঙ্গু নদীর ভয়ংকর বা টলটলে শীতল পাহাড়ি পাথুরে জলের ছোঁয়া পেতে ৃন চায় তবে একবার হলেও যেতে হবে নাফাখুম জলপ্রপাত।
কখন যাবেন
সারাবছর ধরেই ভ্রমণ পিপাসুদের যেতে দেখা যায় নাফাখুম জলপ্রপাত এ। তবে বর্ষা মৌসুমে সাঙ্গু নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে
রেমাক্রি ঝর্ণা
রেমাক্রি মুলত একটি খাল। এটি হল শঙ্খ নদীর একটি উপখাল। এ খাল যেখানে ঝরণা আকারে শঙ্খ নদীতে এসে মিশেছে সেখানে অপরূপ সৌন্দর্যের সৃষ্টি হয়েছে। রেমাক্রীর খালের পানি ও ঝরণার গান আর অরণ্য মিলেমিশে এক অপরূপ সৌন্দর্য সৃষ্টি হয় ।
দেবতাখুমঃ
স্বর্ন মন্দিরঃ
তিন্দুঃ
সাতভাইখুমঃ
তথ্য বহুল আলোচনা
ReplyDeleteরুপের রানী বলা হয় বান্দরবন কে
ReplyDelete