Contain performance

Sunday, March 12, 2023

দেবতাখুম যেতে যেতে

বান্দরবন হচ্ছে রুপ ও বৈচিত্র্য এক শহর।



 পাহাড়, ঝর্ণা, ঝিরি,খুম এর সমাহার বান্দরবন। বান্দরবন অসংখ্য ছোট - বড় খুম ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। বান্দরবন কে বলা হয় খুমের স্বর্গরাজ্য। খুম বলতে তারা জলধারা কে বুঝায়,মানে খালের মতন পানি প্রবাহের স্থান। 

এই খুম গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ও দৃষ্টিনন্দিত খুম হচ্ছে দেবতাখুম। বিশাল পাথরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝর্ণার দৃশ্য এ যেন কল্পনা। বান্দরবান অসংখ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মনি মুক্তার মাঝে নতুন করে ভ্রমণ গন্তব্য হল দেবতাখুম। বান্দরবন এর রোয়াংছড়িতে দেবতাখুম অবস্থিত। দেবতাখুম এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৬০০ ফিট। এসব খুমের মধ্যে বিশাল আকার বণ্য প্রাণী লুকিয়ে থাকে। এডভেঞ্চাপ্রেমীরা ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করে রোমাঞ্চকর এই স্থান গুলোতে। বছর জুরেই ছুটে চলেন পাহাড়ের আনাচে কানাচে সৌন্দর্য খুঁজে বেড়ায়। ফেসবুকে প্রাই সবার চোখে পড়ে অপরুপ সৌন্দর্য দৃষ্টিনন্দিত দেবতাখুম এর ছবি। বিশাল পাথরের ঢালের মাঝখানে প্রবাহিত স্বচ্ছ জলরাশি মূহুর্তেই নিয়ে যাবে আপনাকে কাল্পনিক জগতে। 


বান্দরবন জেলা শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দুরে রোয়াংছড়ি উপজেলায়। শীলবাধা পাড়ায় দেবতাখুমের অবস্থান। এখানে খুমের গভীরতা ৫০ থেকে ৭৯ ফুট পর্যন্ত। দেবতাখুম বান্দরবনের আরেকটি জনপ্রিয় স্থান ভেলাখুম থেকে অনেক বেশি বড়। মাত্র ২০০০-৩০০০ টাকায় ঘুরে আসতে পারেন বান্দরবান ডে লং ট্যুরে দেবতাখুম থেকে। 

বান্দরবান জেলা শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরের রোয়াংছড়ি উপজেলার শীলবাঁধা পাড়ায় দেবতাখুমের অবস্থান। খুমের গভীরতা এখানে ৫০ থেকে ৭০ ফিট। এটি বান্দরবানের আরেক জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থান ভেলাখুম থেকে অনেক বড় এবং অনেক বেশি বড়। মাত্র ২-৩ হাজার টাকার মধ্যেই ডে লং ট্যুরে ঘুরে আসতে পারবেন দেবতাখুম থেকে।

এর পরও প্যারা মনে হলে স্বপ্নবাজ বিডি ট্রাভেলস তো আছেই আপনার পাশে।

দেবতাখুম যাবার পথেই দেখতে পাবেন ছোট একটা খুম।"পং সু আং খুম নামে পরিচিত এই খুমটা। এই খুম পাড়ি দিতে হয় সাঁতার কেটে অথবা এর সাথে লেগে থাকা গাছের সাথে মোটা মোটা শিকড় ধরে ঝুলে ঝুলে যেতে হয় দেবতাখুম। এই পথটা দেখতে যতটা সুন্দর, তেমনি ভয়ংকর ও বটে। বর্ষার মৌসুমে খুনগুলার পানি অনেক বেড়ে যায়। তাই বর্ষার মৌসুমে সেখানে যাওয়া কষ্ট কর।পিচ্ছিল পাথুরে পথ পা ফসকে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বিপর্যয়। বেলা ছাড়া দেবতাখুম যাবার কোন উপায় নেই, তবে বেলা নিয়ে যতই সামনের দিকে এগিয়ে যাবেন রাস্তা ততোই সরু মনে হবে। দেবতাখুম এমনও জায়গার সন্ধান পাবেন যেখানে সূর্যের আলো একদম পরে না বললেই হয়। জুন থেকে জানুয়ারিতে গেলে পর্যাপ্ত পানি থাকে তখন বেলা নিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত যাওয়া যায়। 



দেবতাখুম কখন যাবেনঃ

জুন থেকে জানুয়ারী পর্যন্ত সময়টা দেবতাখুম যাবার উপযুক্ত সময়।  এই সময় খুম গুলোতে প্রচুর পানি থাকে যার ফলে বেলা গুলো অনেক দুর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যায়। খুম গুলো পানি বেশি থাকার ফলে অন্য রকম একটা অনুভূতি পাবেন।  এমনিতে বছরের যে কোন সময় প্রকৃতি প্রেমীদের আনাগোনা চলে দেবতাখুমে।

এর পরও প্যারা মনে হলে স্বপ্নবাজ বিডি ট্রাভেলস তো আছেই আপনার পাশে।

কিভাবে যাবেনঃ

বাংলাদেশের যেকোনো এলাকা থেকে বান্দরবন দেবতাখুম যেতে পারবেন। প্রথমে আপনাকে বান্দরবন শহরে বাসস্ট্যান্ডে যেতে হবে।  সেখান থেকে চান্দের গাড়ি নিয়ে কচ্ছপতলী যেতে হবে। কচ্ছপতলী থেকে শীলবাধা পাড়ায় দেবতাখুম এর ট্রেকিং শুরু হবে। কচ্ছপতলী গিয়ে সেনাবাহিনীর চেক পোস্ট এ ন্যাশনাল আইডি কার্ড এর ফটোকপি জমা দিয়ে অনুমতি সাপেক্ষে শীলবাধা যেতে পারবেন।  আইডি কার্ড এর ফটোকপি সাথে করে নিয়ে যাবেন, কচ্ছপতলীতে ফটোকপি করার দোকান নাই। সেনাবাহিনীর অফিসার কে বললে গাইড ঠিক করে দিবে, চাইলে আপনি নিজেই গাইড ঠিক করে নিতে পারবেন। গাইড খরচ ৫০০ টাকা নিবে। তবে গাইড ছাড়া কোন অবস্থায় যাওয়া উচিৎ নয়,চাইলে ও গাইড ছাড়া যেতে পারবেন না। 

এর পরও প্যারা মনে হলে স্বপ্নবাজ বিডি ট্রাভেলস তো আছেই আপনার পাশে।

কয়েকজন গাইডের নাম্বার 

চিকু:০১৮৯০-১৭০৮০৩

আপন জয় তন্ঞ্চঙ্গ্যা: ০১৮৮২-২৬৭৭১৪

শুভজয় তন্ঞ্চঙ্গ্যা: ০১৪৪১-৫৫৪৫৮২

রুন্ময় লাল: ০১৮৫৭-২৭২০৯৫

গাইড ঠিক করা হয়ে গেলে ট্রেকিং শুরু করুন দেবতাখুম যাবার উদ্দেশ্য। ধরে নিন এটা মোটামুটি মধ্যম মানের একটা ট্রেকিং রোড। কচ্ছপতলী থেকে দেবতাখুম পৌঁছাতে আপনার ১.৫০ থেকে ০২ ঘন্টার মতন সময় লাগতে পারে। এই সময়টা দারুণ উপভোগ করার মতন,কারণ এই সময়টা আপনাকে যেতে হবে পাহাড়, বন,নদী, ঝিরির পাশ দিয়ে। এর মাঝেই কয়েক বার ঝিরি পার হতে হবে। এভাবেই একসময় পৌঁছে যাবেন অপার্থিব সৌন্দর্যের লীলাভূমি শীলাবাধ পাড়ায়। এখানেই মূলত আপনার বেজক্যাম্প। পাড়ার পাশে একটি ঝর্ণা আছে চাইলে আপনি সেটাও দেখে যেতে পারেন। লোকজন এটাকে শীলাবাধা ঝর্ণা নামে চিনে। এর পরও প্যারা মনে হলে স্বপ্নবাজ বিডি ট্রাভেলস তো আছেই আপনার পাশে।

কোথায় খাবেনঃ

সকালের নাস্তা বান্দরবন শহরে নেমেই করে নিবেন। বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে অনেকগুলো রেস্টুরেন্ট পাবেন। নিল দিগন্ত, কলাপাতা, রুপসী বাংলা সহ আরও অনেক গুলো রেস্টুরেন্ট আছে। আপনার পছন্দমত যেকোনো একটায় নাস্তা করে নিবেন। ৬০-৭০ টাকার ভিতরে নাস্তা শেষ করে নিতে পারবেন।  এর পর চান্দের গাড়ি রিজার্ভ নিয়ে দেবতাখুমের পথে যাত্রা শুরু। কচ্ছপতলী নেমে ট্রেকিং শুরু করার আগেই দুপুরের খাবার অর্ডার করে যাবেন। নয়তো ট্রেকিং শেষ করে এসে খাবার পাবেন না। কচ্ছপতলীতে ৩-৪ টা খাবারের দোকান আছে, এগুলোতে মূলত অর্ডার করা হলেই খাবার তৈরি করা হয়। খাবারের মেনু হিসাবে মুরগির মাংস, ডাল,ভাত ও আলুর ভর্তা পাবেন।জনপ্রতি প্যাকেজ পরবে ১২০-১৫০ টাকা পর্যন্ত। 

কোথায় থাকবেনঃ

দেবতাখুম ঘুরতে গেলে আপনাকে থাকতে হবে বান্দরবন শহরে। তাই ঘুরাঘুরি শেষ করে থাকার জন্য বান্দরবান শহর আপনার ভরসা। তবে দেবতাখুম থেকে ফিরতি পথে বিকেল ০৫ টার পর গাড়ি পাবেন না।  তবে সিএনজি সবসময় পাওয়া যায়। রিজার্ভ গাড়ি নিলে তো কথাই নেই, সব কিছু নিয়ম অনুযায়ী হবে। 

দেবতাখুম ভ্রমণ টিপসঃ

👉 কচ্ছপতলীতে নেমে আর্মি ক্যাম্পে রিপোর্ট করে দেবতাখুম যাবার অনুমতি নিতে হবে।

👉 আর্মি ক্যাম্পে জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি জমা দতে হবে।  সাথে করে দুই কপি নিয়ে যাবেন। 

👉 কচ্ছপতলীর পর আপনাকে নেটওয়ার্ক এরিয়ার বাহিরে থাকতে হবে।

👉 দেবতাখুম বেলায় চড়ার জন্য লাইফ জ্যাকেট সাথে নিবেন।

👉 ট্রেকিং এর জন্য প্লাস্টিকের বুট বা ট্রেকিং স্যান্ডেল নিতে হবে।আপনি চাইলে বান্দরবন শহর থেকে ও কিনতে পারেন। 

👉 চান্দের গাড়িতে চাদে উঠবেন না।পাহাড়ি আঁকাবাকা রাস্তা যে কোন সময় বিপদ ঘটতে পারে। 

👉 অনুমতি ছাড়া আদিবাসীদের ছবি তুলবেন না।এটা সাধারণ একটা কমন সেন্স এর বিষয়। আদিবাসীদের জীবনযাত্রার ও কালচারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করুন।এমন কিছু করবেন না যাতে অন্য জাতির মানুষের কাছে খারাপ লাগে। 

👉 কোন প্রকার ময়লা আবর্জনা ও অপচনশীল বস্তু পাহাড় বা পর্যটন স্থানে ফেলবেন না।

👉 দেবতাখুম বেলায় ঘুরবার জন্য আগেই বলে রাখা ভালো। 

👉 ভালোমতো না চিনলে কোন ট্রাভেল গ্রুপ এর সাথে যাওয়াই উত্তম। 






মোঃ শওকত আলী 

স্বপ্নবাজ বিডি ট্রাভেলস (ফাউন্ডার এডমিন)


1 comment:

  1. বিস্তারিত ভিতর জানা গেল,আশা করি সবার উপকার হবে

    ReplyDelete

Featured Post

লালাখাল নৈসর্গিক সৌন্দর্যময় এক পর্যটন কেন্দ্র

  লালাখালঃ লালাখাল সিলেট শহর থেকে প্রায় ৩৫ কি.মি দূরে অবস্থিত।  একটি পর্যটন কেন্দ্র। জৈন্তাপুর পুর উপজেলায় একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। ভারত...

Popular Contain