Contain performance

Tuesday, October 10, 2023

লালাখাল নৈসর্গিক সৌন্দর্যময় এক পর্যটন কেন্দ্র

 লালাখালঃ

লালাখাল সিলেট শহর থেকে প্রায় ৩৫ কি.মি দূরে অবস্থিত। 

একটি পর্যটন কেন্দ্র। জৈন্তাপুর পুর উপজেলায় একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জির ঠিক নিচেই লালাখাল এর অবস্থান। জৈন্তা পাহাড় থেকে নেমে আসা পাহাড় থেকে নেমে আসা প্রবাহমান পানির সাথে মিশে থাকা খনিজ  উপাদান মিশে থাকার কারণে লালাখাল এর পানি এমন নিলচে বর্ণের দেখায়। আর এই নীলচে কালার পানির কারণে পর্যটকদের আনাগোনা চলে দেখা যায়।

 কিভাবে যাবেন লালাখালঃ

লালাখাল যেতে হলে বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে প্রথমে আপনাকে যেতে হবে সিলেট শহরে। সিলেট শহর থেকে দক্ষিন সারি ঘাট,সারি ঘাট থেকে লালাখাল ঘুরবার জন্য বোট রিজার্ভ নিতে হবে। বোট ভাড়া ১৬৫০/- ফিক্সড, ২ ঘন্টার জন্য।  আপনারা সিএনজি করে একটু ভিতরে গেলে ৫/৬ জনের জন্য বেট পাবেন।  ৫০০-৬০০/- নিবে ১ ঘন্টার জন্য। 

কখন যাবেনঃ 

লালাখাল বছরের সব সময়ই যাওয়া যায়। তবে নীল পানি যেহেতু লালাখাল এর প্রধান আকর্ষণ, তাই শীত কালে যাওয়াই ভালো হবে।

অর্থাৎ সেপ্টেম্বর এর পর থেকে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত সময় যাওয়াটা ভালো হবে।

কোথায় থাকবেনঃ 

সারি ঘাটের আশেপাশে কিছু রিসোর্ট আছে, আপনি চাইলে সেখানে থাকতে পারেন। আবার সিলেট শহরে এসে থাকতে পারেন। 




মোঃ শওকত আলী 

স্বপ্নবাজ বিডি ট্রাভেলস 

(ফাউন্ডার এডমিন)



Thursday, August 3, 2023

স্বপ্নবাজের কিছু কথা,পর্ব ০২


 স্বপ্নবাজের কিছু কথা

পার্ট ০২


স্বপ্নবাজের কিছু কথা পার্ট ০১ তুলে ধরেছি কেন আমরা Swapnabaaz BD travels গ্রুপ খুলেছি।

এবার আলোচনা করবে আমাদের উদ্দেশ্য নিয়ে। 

Swapnabaaz BD travels খোলার আগে আমরা অনেক জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা নষ্ট করেছি শুধু পর্যটন কেন্দ্র না চিনার কারণে। 

অন্য কিছু ট্রাভেল গ্রুপ এর সাথে এড হয়ে ট্যুর করেছি কিন্তু আশানুরূপ আনন্দ নিতে পারিনি। 

কারণঃ

১. অধিকাংশ ট্রাভেলার অপরিচিত 

২. হিডেন চার্জ ও বিভিন্ন কমিটমেন্ট না রাখা।

বিষয়গুলো রীতিমতো আমাদের  হতাশ করে দেয়।

সেই থেকেই Swapnabaaz এর পথচলা। 

আমরা স্বপ্নবাজ বিডি ট্রাভেলস এর এডমিন প্যানেলে সবাই কর্মজীবী, শত ব্যাস্ততার মাঝে সময় পেলেই ভ্রমণ পিপাসুদের নিয়ে ছুটে চলছি পাহাড় - ঝর্ণা - সাগর - প্রকৃতির টানে বাংলাদেশের যেকোনো পর্যটন কেন্দ্রে।

আমরা চাই কোন ট্রাভেলার তার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা যেন তিক্ত না হয়। পর্যটন এরিয়ায় নিয়ে সকল তথ্য জানতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। 

বাজেট কম সমস্যা নাই, হিডেন চার্জ মুক্ত ট্যুর হোক স্বপ্নবাজ বিডি ট্রাভেলস এর সাথে। ট্যুরে গিয়ে নিজেকে কখনো যেন একা মনে না হয়। সকল ইভেন্ট হোক পরিচিত মানুষ আপন জনের সাথে। আপনার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা যেন হয় রোমাঞ্চকর। 

আমরা কখনো বলবো না স্বপ্নবাজই সেরা তবে আপনার প্রতি একটাই বার্তা একটা ট্যুর হোক Swapnabaaz এর সাথে। পার্থক্য আপনিই খুঁজে নিয়ে। 

তবে ভ্রমণ পিপাসুদের ট্যুর বিষয়ক যে কোন পরামর্শের জন্য আমরা আছি আপনার পাশে। আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে সর্বোচ্চ পরামর্শ থাকবে আপনার জন্য। 

ভ্রমণ করুন নিজের জন্য... 

ভ্রমণ করুন নিজে নিজে বা দলগত ভাবে।

ভ্রমণ হোক অন্য গ্রুপের সাথে কিংবা Swapnabaaz এর সাথে। 

বাংলার অপরুপ সৌন্দর্য উপভোগ করুন মন ভরে। প্রকৃতির কাছে গিয়ে বিনয়ী ও বিজ্ঞ হোন আগামীর প্রজন্মের জন্য। 

@Swapnabaaz BD travels

Sunday, March 26, 2023

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত, সমুদ্রকন্যা

 কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত যা সাগরকন্যা নামপও পরিচিতি আছে। 

কুয়াকাটা বাংলাদেশের দক্ষিন পশ্চিম অঞ্চলের একটি সমুদ্র সৈকত ও পর্যটন কেন্দ্র। পটুয়াখালী জেলার,কলাপাড়া উপজেলার, লতাচাপলী ইউনিয়নে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এর অবস্থান। ঢাকা থেকে সড়ক পথে দুরত্ব ৩০৮ কিলোমিটার।  বরিশাল থেকে দুরত্ব ১০৮ কিলোমিটার। 
কুয়াকাটা নামের পিছনে রয়েছে আরকানদের আগমনীয় ইতিহাস। কুয়া শব্দটি এসেছে কুপ থেকে। ধরনা করা হয় ১৮ শতকে মুঘল শাসকদের দ্বারা বার্মা থেকে বিতাড়িত  হয়ে আরাকানরা এই অঞ্চলে বসবাস স্থাপন করেন। তখন তারা সুপেয় জলের অভাব পূরণ করতে এই অঞ্চলে কুপ খনন করে। সেই থেকে কুয়াকাটা বলা হয়।
১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সমুদ্র সৈকত অন্যতম নৈসর্গিক সৌন্দর্যময় একটা পর্যটন কেন্দ্র। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এই একমাত্র সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত ভাল মতন উপভোগ করা যায়। সবচাইতে ভালো সূর্যোদয় দেখা যায় সৈকতের গঙ্গামতির বাক থেকে এবং সূর্যাস্ত ভাল মতন দেখা যায় পশ্চিম সৈকত থেকে। 
এছাড়াও কুয়াকাটা যেসকল দর্শনীয় স্থান রয়েছে সেগুলো হল:-
 ফাতরার বন, সৈকতের পশ্চিম দিকে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল শুরু সেগুলো কে ফাতরার বন বলে।
যা দ্বিতীয় সুন্দরবন হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এখানে রয়েছে কেওড়া,গেওড়া,ফাতরা,সুন্দরী, গড়ান,গোলপাতা ইত্যাদি ম্যানগ্রোভ জাতীয় উদ্ভিদ রয়েছে। সমুদ্র সৈকত ইঞ্জিনচালিতো বোডে ফাতরার বন যেতে ১ ঘন্টা সময় লাগবে।

সীমা বৌদ্ধ মন্দির : কুয়াকাটা প্রাচীন কুয়াটির সামনেই রয়েছে সীমা বৌদ্ধ মন্দির। এই মন্দিরে রয়েছে প্রায় সায়ত্রিশ মন ওজনের অষ্টধাতুর তৈরি ধ্যানমগ্নরত বৌদ্ধ মুর্তি। 
কেরানিপাড়া: সীমা বৌদ্ধ মন্দির এর সামনে থেকেই রয়েছে রাখাইনদের উপজাতি পাড়া কেরানিপারা। এখনকার রাখাইন দের প্রধান কাজ হল কাপড় বুনন করা।
আলীপুর বন্দরঃ কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে উত্তরে ৪ কিলোমিটার দূরে রয়েছে দক্ষিনাঞ্চলের সব চেয়ে বড় মাছের আড়ত আলীপুর বন্দর। 
মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ মন্দিরঃ কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে পশ্চিমে প্রায় ০৮ কিলোমিটার দুরে মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ মন্দির রয়েছে। এই মন্দিরে রয়েছে এশিয়ার সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ মুর্তি। 
গঙ্গামতির জঙ্গল: কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পূর্ব দিকে গিয়ে  শেষ হয়েছে গঙ্গামতির জঙ্গল।  

Sunday, March 12, 2023

দেবতাখুম যেতে যেতে

বান্দরবন হচ্ছে রুপ ও বৈচিত্র্য এক শহর।



 পাহাড়, ঝর্ণা, ঝিরি,খুম এর সমাহার বান্দরবন। বান্দরবন অসংখ্য ছোট - বড় খুম ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। বান্দরবন কে বলা হয় খুমের স্বর্গরাজ্য। খুম বলতে তারা জলধারা কে বুঝায়,মানে খালের মতন পানি প্রবাহের স্থান। 

এই খুম গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ও দৃষ্টিনন্দিত খুম হচ্ছে দেবতাখুম। বিশাল পাথরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝর্ণার দৃশ্য এ যেন কল্পনা। বান্দরবান অসংখ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মনি মুক্তার মাঝে নতুন করে ভ্রমণ গন্তব্য হল দেবতাখুম। বান্দরবন এর রোয়াংছড়িতে দেবতাখুম অবস্থিত। দেবতাখুম এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৬০০ ফিট। এসব খুমের মধ্যে বিশাল আকার বণ্য প্রাণী লুকিয়ে থাকে। এডভেঞ্চাপ্রেমীরা ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করে রোমাঞ্চকর এই স্থান গুলোতে। বছর জুরেই ছুটে চলেন পাহাড়ের আনাচে কানাচে সৌন্দর্য খুঁজে বেড়ায়। ফেসবুকে প্রাই সবার চোখে পড়ে অপরুপ সৌন্দর্য দৃষ্টিনন্দিত দেবতাখুম এর ছবি। বিশাল পাথরের ঢালের মাঝখানে প্রবাহিত স্বচ্ছ জলরাশি মূহুর্তেই নিয়ে যাবে আপনাকে কাল্পনিক জগতে। 


বান্দরবন জেলা শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দুরে রোয়াংছড়ি উপজেলায়। শীলবাধা পাড়ায় দেবতাখুমের অবস্থান। এখানে খুমের গভীরতা ৫০ থেকে ৭৯ ফুট পর্যন্ত। দেবতাখুম বান্দরবনের আরেকটি জনপ্রিয় স্থান ভেলাখুম থেকে অনেক বেশি বড়। মাত্র ২০০০-৩০০০ টাকায় ঘুরে আসতে পারেন বান্দরবান ডে লং ট্যুরে দেবতাখুম থেকে। 

বান্দরবান জেলা শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরের রোয়াংছড়ি উপজেলার শীলবাঁধা পাড়ায় দেবতাখুমের অবস্থান। খুমের গভীরতা এখানে ৫০ থেকে ৭০ ফিট। এটি বান্দরবানের আরেক জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থান ভেলাখুম থেকে অনেক বড় এবং অনেক বেশি বড়। মাত্র ২-৩ হাজার টাকার মধ্যেই ডে লং ট্যুরে ঘুরে আসতে পারবেন দেবতাখুম থেকে।

এর পরও প্যারা মনে হলে স্বপ্নবাজ বিডি ট্রাভেলস তো আছেই আপনার পাশে।

দেবতাখুম যাবার পথেই দেখতে পাবেন ছোট একটা খুম।"পং সু আং খুম নামে পরিচিত এই খুমটা। এই খুম পাড়ি দিতে হয় সাঁতার কেটে অথবা এর সাথে লেগে থাকা গাছের সাথে মোটা মোটা শিকড় ধরে ঝুলে ঝুলে যেতে হয় দেবতাখুম। এই পথটা দেখতে যতটা সুন্দর, তেমনি ভয়ংকর ও বটে। বর্ষার মৌসুমে খুনগুলার পানি অনেক বেড়ে যায়। তাই বর্ষার মৌসুমে সেখানে যাওয়া কষ্ট কর।পিচ্ছিল পাথুরে পথ পা ফসকে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বিপর্যয়। বেলা ছাড়া দেবতাখুম যাবার কোন উপায় নেই, তবে বেলা নিয়ে যতই সামনের দিকে এগিয়ে যাবেন রাস্তা ততোই সরু মনে হবে। দেবতাখুম এমনও জায়গার সন্ধান পাবেন যেখানে সূর্যের আলো একদম পরে না বললেই হয়। জুন থেকে জানুয়ারিতে গেলে পর্যাপ্ত পানি থাকে তখন বেলা নিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত যাওয়া যায়। 



দেবতাখুম কখন যাবেনঃ

জুন থেকে জানুয়ারী পর্যন্ত সময়টা দেবতাখুম যাবার উপযুক্ত সময়।  এই সময় খুম গুলোতে প্রচুর পানি থাকে যার ফলে বেলা গুলো অনেক দুর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যায়। খুম গুলো পানি বেশি থাকার ফলে অন্য রকম একটা অনুভূতি পাবেন।  এমনিতে বছরের যে কোন সময় প্রকৃতি প্রেমীদের আনাগোনা চলে দেবতাখুমে।

এর পরও প্যারা মনে হলে স্বপ্নবাজ বিডি ট্রাভেলস তো আছেই আপনার পাশে।

কিভাবে যাবেনঃ

বাংলাদেশের যেকোনো এলাকা থেকে বান্দরবন দেবতাখুম যেতে পারবেন। প্রথমে আপনাকে বান্দরবন শহরে বাসস্ট্যান্ডে যেতে হবে।  সেখান থেকে চান্দের গাড়ি নিয়ে কচ্ছপতলী যেতে হবে। কচ্ছপতলী থেকে শীলবাধা পাড়ায় দেবতাখুম এর ট্রেকিং শুরু হবে। কচ্ছপতলী গিয়ে সেনাবাহিনীর চেক পোস্ট এ ন্যাশনাল আইডি কার্ড এর ফটোকপি জমা দিয়ে অনুমতি সাপেক্ষে শীলবাধা যেতে পারবেন।  আইডি কার্ড এর ফটোকপি সাথে করে নিয়ে যাবেন, কচ্ছপতলীতে ফটোকপি করার দোকান নাই। সেনাবাহিনীর অফিসার কে বললে গাইড ঠিক করে দিবে, চাইলে আপনি নিজেই গাইড ঠিক করে নিতে পারবেন। গাইড খরচ ৫০০ টাকা নিবে। তবে গাইড ছাড়া কোন অবস্থায় যাওয়া উচিৎ নয়,চাইলে ও গাইড ছাড়া যেতে পারবেন না। 

এর পরও প্যারা মনে হলে স্বপ্নবাজ বিডি ট্রাভেলস তো আছেই আপনার পাশে।

কয়েকজন গাইডের নাম্বার 

চিকু:০১৮৯০-১৭০৮০৩

আপন জয় তন্ঞ্চঙ্গ্যা: ০১৮৮২-২৬৭৭১৪

শুভজয় তন্ঞ্চঙ্গ্যা: ০১৪৪১-৫৫৪৫৮২

রুন্ময় লাল: ০১৮৫৭-২৭২০৯৫

গাইড ঠিক করা হয়ে গেলে ট্রেকিং শুরু করুন দেবতাখুম যাবার উদ্দেশ্য। ধরে নিন এটা মোটামুটি মধ্যম মানের একটা ট্রেকিং রোড। কচ্ছপতলী থেকে দেবতাখুম পৌঁছাতে আপনার ১.৫০ থেকে ০২ ঘন্টার মতন সময় লাগতে পারে। এই সময়টা দারুণ উপভোগ করার মতন,কারণ এই সময়টা আপনাকে যেতে হবে পাহাড়, বন,নদী, ঝিরির পাশ দিয়ে। এর মাঝেই কয়েক বার ঝিরি পার হতে হবে। এভাবেই একসময় পৌঁছে যাবেন অপার্থিব সৌন্দর্যের লীলাভূমি শীলাবাধ পাড়ায়। এখানেই মূলত আপনার বেজক্যাম্প। পাড়ার পাশে একটি ঝর্ণা আছে চাইলে আপনি সেটাও দেখে যেতে পারেন। লোকজন এটাকে শীলাবাধা ঝর্ণা নামে চিনে। এর পরও প্যারা মনে হলে স্বপ্নবাজ বিডি ট্রাভেলস তো আছেই আপনার পাশে।

কোথায় খাবেনঃ

সকালের নাস্তা বান্দরবন শহরে নেমেই করে নিবেন। বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে অনেকগুলো রেস্টুরেন্ট পাবেন। নিল দিগন্ত, কলাপাতা, রুপসী বাংলা সহ আরও অনেক গুলো রেস্টুরেন্ট আছে। আপনার পছন্দমত যেকোনো একটায় নাস্তা করে নিবেন। ৬০-৭০ টাকার ভিতরে নাস্তা শেষ করে নিতে পারবেন।  এর পর চান্দের গাড়ি রিজার্ভ নিয়ে দেবতাখুমের পথে যাত্রা শুরু। কচ্ছপতলী নেমে ট্রেকিং শুরু করার আগেই দুপুরের খাবার অর্ডার করে যাবেন। নয়তো ট্রেকিং শেষ করে এসে খাবার পাবেন না। কচ্ছপতলীতে ৩-৪ টা খাবারের দোকান আছে, এগুলোতে মূলত অর্ডার করা হলেই খাবার তৈরি করা হয়। খাবারের মেনু হিসাবে মুরগির মাংস, ডাল,ভাত ও আলুর ভর্তা পাবেন।জনপ্রতি প্যাকেজ পরবে ১২০-১৫০ টাকা পর্যন্ত। 

কোথায় থাকবেনঃ

দেবতাখুম ঘুরতে গেলে আপনাকে থাকতে হবে বান্দরবন শহরে। তাই ঘুরাঘুরি শেষ করে থাকার জন্য বান্দরবান শহর আপনার ভরসা। তবে দেবতাখুম থেকে ফিরতি পথে বিকেল ০৫ টার পর গাড়ি পাবেন না।  তবে সিএনজি সবসময় পাওয়া যায়। রিজার্ভ গাড়ি নিলে তো কথাই নেই, সব কিছু নিয়ম অনুযায়ী হবে। 

দেবতাখুম ভ্রমণ টিপসঃ

👉 কচ্ছপতলীতে নেমে আর্মি ক্যাম্পে রিপোর্ট করে দেবতাখুম যাবার অনুমতি নিতে হবে।

👉 আর্মি ক্যাম্পে জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি জমা দতে হবে।  সাথে করে দুই কপি নিয়ে যাবেন। 

👉 কচ্ছপতলীর পর আপনাকে নেটওয়ার্ক এরিয়ার বাহিরে থাকতে হবে।

👉 দেবতাখুম বেলায় চড়ার জন্য লাইফ জ্যাকেট সাথে নিবেন।

👉 ট্রেকিং এর জন্য প্লাস্টিকের বুট বা ট্রেকিং স্যান্ডেল নিতে হবে।আপনি চাইলে বান্দরবন শহর থেকে ও কিনতে পারেন। 

👉 চান্দের গাড়িতে চাদে উঠবেন না।পাহাড়ি আঁকাবাকা রাস্তা যে কোন সময় বিপদ ঘটতে পারে। 

👉 অনুমতি ছাড়া আদিবাসীদের ছবি তুলবেন না।এটা সাধারণ একটা কমন সেন্স এর বিষয়। আদিবাসীদের জীবনযাত্রার ও কালচারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করুন।এমন কিছু করবেন না যাতে অন্য জাতির মানুষের কাছে খারাপ লাগে। 

👉 কোন প্রকার ময়লা আবর্জনা ও অপচনশীল বস্তু পাহাড় বা পর্যটন স্থানে ফেলবেন না।

👉 দেবতাখুম বেলায় ঘুরবার জন্য আগেই বলে রাখা ভালো। 

👉 ভালোমতো না চিনলে কোন ট্রাভেল গ্রুপ এর সাথে যাওয়াই উত্তম। 






মোঃ শওকত আলী 

স্বপ্নবাজ বিডি ট্রাভেলস (ফাউন্ডার এডমিন)


Friday, March 10, 2023

খৈয়াছড়া ঝর্ণা ট্রেইল, সীতাকুণ্ড (মিরসরাই)

 বাংলাদেশের পর্যটন খ্যাত দিন দিন মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে। ভৌগোলিক দিক থেকে বাংলাদেশের প্রকৃতি ও আবহাওয়া বৈচিত্র্যময় রুপের। বাংলাদেশ কে রুপের রানী বলা হয়ে থাকে।



 প্রকৃতি জেনো আপন মহিমায় সজ্জিত বাংলার জনপদ। এমনই এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় জনপদের সন্ধানে আমাদের চেষ্টা। 

আজকে খৈয়াছড়া ঝর্ণা ট্রেইল নিয়ে আলোচনা করা হবে। খৈয়াছড়া ঝর্ণা প্রকৃতি দিক থকে এর ভৌগোলিক অবস্থান চট্টগ্রামের মিরসরাই অঞ্চলে। আকার আকৃতির দিক থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঝর্ণা হচ্ছে খৈয়াছড়া ঝর্ণা। এই ঝর্ণাতে ছোট বড় মিলিয়ে মোট ১১ টা ধাপ আছে।এর মাঝে মুলধাপ হচ্ছে ৯ টা। অন্য আর কোন ঝর্ণাতে এখন পর্যন্ত এই বৈশিষ্ট্য দেখা যায়নি। এই জন্য খৈয়াছড়া ঝর্ণাকে বলা হয় ঝর্ণার রানী।


খৈয়াছড়া ঝর্ণার অবস্থান কোথায়ঃ

খৈয়াছড়া ঝর্ণা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের মিরসরাই উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নের বড়তাকিয়া বাজারের পূর্ব পাশে অবস্থিত। ঢাকা চট্টগ্রাম বিশ্বরোড এর কাছেই এর অবস্থান।

খৈয়াছড়া ঝর্ণায় কখন যাবেনঃ

খৈয়াছড়া ঝর্ণাতে সব সময় কম বেশি পানি থাকে। তবে বর্ষাকালে সব থেকে বেশি পরিমাণ পানি প্রবাহ থাকে। তাই বর্ষাকালে খৈয়াছড়া ঝর্ণা দেখতে যাওয়াই উত্তম। তবে ভড়া বর্ষায় অনেক রিক্সি ও বিপদজনক। তাই বর্ষার শুরুতে বা বর্ষার শেষে গেলেই ভালো হয়। তখন আশেপাশের পরিবেশ ও ঝর্ণার সৌন্দর্য মিলিয়ে একটু বেশিই সুন্দর মনে হয়। 

খৈয়াছড়া ঝর্ণা কিভাবে যাবেনঃ

দেশের যে কোন জায়গা থেকে বাসে আসলে আপনাকে নামতে হবে ফেনীতে সেখান থেকে চট্টগ্রামগামী লোকাল বাসে করে খৈয়াছড়া বাজার বড়তাকিয়া নেমে যাবেন। 

অথবা সরাসরি মিরসরাই সীতাকুণ্ড চলে আসতে পারেন। তবে সে ক্ষেত্রে আগে থেকে সুপারভাইজার কে বলে রাখবেন আপনি খৈয়াছড়া ঝর্ণায় যাবপন,তাহলে আপনাকে মিরসরাই খৈয়াছড়া বাজারের কাছে আইডিয়াল স্কুলের সামনে নামিয়ে দিবে। সেখান থেকে সিএনজি অটো করে যেতে পারেন খৈয়াছড়া ঝর্ণায়।

মিরসরাই থেকে খৈয়াছড়াঃ

খৈয়াছড়া আইডিয়াল স্কুলের সামনে থেকে সিএনজি নিয়ে চলে যাবেন খৈয়াছড়া ঝিরির কাছে। ভাড়া নিবে ১৩০-১৫০ টাকার মতন।  তবে আপনি চাইলে পায়ে হেঁটে ও চলে যেতে পারবেন। স্থানীয় কাউকে বললেই খৈয়াছড়া ঝর্ণার পথ দেখিয়ে দিবে। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে নেমে ১০ মিনিট পূর্ব দিকে হেটে গেলেই রেললাইন দেখতে পাবেন। রেললাইন পাড়ি দিয়ে আরও ১৫-২০ মিনিট হাঁটলেই খৈয়াছড়ার ঝিরির সন্ধান পাওয়া যাবে।

এই ঝিরির কাছে থেকেই মূলত ট্রেকিং শুরু। ঝিরির পথ ধরে ৩০-৪০ মিনিট জংগলের ভিতর দিয়ে হাঁটলেই ঝর্ণার দেখা মিলবে। যাবার পথ একটাই তাই পথ হারানোর কোন ভয় নেই। চাইলে সাথে স্থানীয় কাউকে গাইড হিসাবে নিতে পারেন। গাইড খরচ নিবে ৩০০-৫০ টাকা। তবে গাইড না নিলেও চলবে। কারণ খৈয়াছড়া ঝর্ণা আসা-যাওয়া অনেক পর্যটকের দেখা পাবেন। ঝর্ণার প্রথম ধাপে গেলেই বাকি ধাপগুলি একটু খেয়াল করলেই পেয়ে যাবেন। তবে ট্রেকিং করার সময় সাবধনে ট্রেকিং করবেন, একটু সাবধান হলে দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাবেন। অতিরিক্ত মাত্রায় আডবেঞ্চর,হৈ হুল্লোড়, লাফাঝাপি করা, অসাবধানতার করানে অনেক পর্যটক সেখানে দুর্ঘটনায় পরেছে।

খৈয়াছড়া ঝর্ণায় প্রবেশ ফি জনপ্রতি ২০/- 

কোথায় খাবেন?

খৈয়াছড়া ঝর্ণায় যাবার পথে বেশ কিছু খাবার হোটেল দেখতে পাবেন। সেখানে আপনার মেন্যু অনুযায়ী খাবারের অর্ডার করে ফেরার পথে খেয়ে যেতে পারবেন। এই সব স্থানীয় হোটেলে অনেক স্বল্পমূল্যে খাবার খেতে পারবেন তবুও প্রয়োজনে দাম যাচাই করে নিতে পারেন। তবে মনে রাখা ভাল বিকাল ৫ টার পর এখানকার সব স্থানীয় খাবার হোটেল বন্ধ হয়ে যায়। তবে অবশ্যই যাবার পথেই যেকোন স্থানীয় হোটেলে খাবার অর্ডার করে যেতে হবে,নয়তো ফিরতি পথে খাবার পাবেন না আর যে হোটেলে খাবার অর্ডার করবেন চাইলে সেখানেই সাথের ব্যাগ রেখে যেতে পারবেন। 

এছাড়া সীতাকুণ্ডের ফিরে এসে সৌদিয়া রেস্তোরা, আপন রেস্তোরা কিংবা আল আমিন রেস্টুরেন্টে পছন্দের খাবার খেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেনঃ

আপনি চাইলে চেয়ারম্যান এর বাংলতে থাকতে পারেন, অথবা সীতাকুণ্ড বাজার বা চট্টগ্রাম শহরে চলে আসতে হবে।


মোঃ শওকত আলী 

স্বপ্নবাজ বিডি ট্রাভেলস (ফাউন্ডার এডমিন)

Sunday, March 5, 2023

ট্যুরিস্ট আর ট্রাভেলার এর পার্থক্য কি কি

 ব্যস্ত নগরীতে সবাই ব্যস্ত। সবাই নিজ নিজ গোলার্ধে ব্যস্ত। মাঝে মঝে সময় পেলেই বা সময় করে ছুটে চলে পৃথিবীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে।



কখনো কখনো শত কাজ ফেলে নিজেকে একটু রিফ্রেশমেন্ট দিতে স্ব কিছু ফেলে যেতে হয় সুন্দর সুন্দর দর্শনীয় স্থানে। তবে আমাদের অনেকেরই জানা নেই আমরা টুরিস্ট নাকি ট্রাভেলার হিসাবে প্রকৃতির কাছে যাচ্ছি। আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে ঘুরতে যাবো এতে টুরিস্ট নাকি ট্রাভেলার এতে এত কিছু জানতে হবে কেন। একটা হলেই হয় এগুলো জেনে কি হবে। আমার দরকার আনন্দ উপভোগ,রিফ্রেশমেন্ট এগুলো হলেই হয়। এমনটাই সবাই ভাবছেনতাই তো?

তাদের জন্য আমাদের স্বপ্নবাজ বিডি ট্রাভেলস এর আজকের পোস্ট। আপনি যখন কোথাও ভ্রমনে যাচ্ছেন,আপনার যদি জানা থকে আপনি ট্যুরিস্ট নাকি ট্রাভেলার তখন মনের ভিতরে অন্য রকম একটা ফিল কাজ করবে। সবচেয়ে বড় কথা আপনি যদি টুরিস্ট নাকি ট্রাভেলার বুঝে ভ্রমন করে থাকেন তবেআপনি ভ্রমণের অনেক ছোটখাটো পরিস্থিতি আগে থেকেই নিতে পারবেন। কারণ ট্যুরিস্ট আর ট্রাভেলার কখনো এক বিষয় না। যদিও ক্ষেত্রে দুইজনের উদ্দেশ্যই এক থাকে কিন্তু বৈশিষ্ট্য এক না। অধিকাংশ সময় ভ্রমণে গিয়ে বিপত্তি বাধে,মত বিরোধ তৈরি হয়। যার ফলে প্রকৃত ভ্রমণ অভিজ্ঞতা নিতে পারে না। আমাদের দেশের পরিপ্রেক্ষিতে দলগত ভাবে ট্রাভেল গ্রুপের সাথে অনেকেই ট্যুর করে। অনেকেই ট্যুর সমদ্ধে বিন্দুমাত্র ধারনা ও নেয় না। দেখা-দেখি ট্যুরে সিট কনফার্ম করে। অনেক সময় ট্রাভেল গ্রুপ গুলোও বুঝে বা না বুঝে টুরিস্ট আর ট্রাভেলার একসাথে করে ইভেন্ট রেডি করে। বিপত্তি বাঁধে ট্যুরে গিয়ে। অনেক সময় ট্যুর পরিবেশ টা নষ্ট করেদেয় নিজেদের অজান্তে। তাই সবার জানা দরকার টুরিস্ট নাকি ট্রাভেলার কি হিসেবে আপনি ভ্রমণে বের হলেন। এই বিষয়টা জানা থাকলে সমস্যা হবার কথা না। তাহলে জেনে নেওয়া যাক ট্যুরিস্ট আর ট্রাভেলার এর মাঝে পার্থক্য কোথায় কোথায়।

।।আমরা ভ্রমণে যাওয়ার পূর্বেই কোথায় থাকবে,কি করবো,কিভাবে থাকবে এসব বিষয়ে নানা উত্তেজনা তার ভিতরে কাজ করে। সেই সাথে খাওয়া-দাওয়ার বন্ধোবস্ত পর্যন্ত আগে থেকেই করে ফেলি। তবে ট্যুরিস্ট ও ট্রাভেলারের ভিতরে থাকা  খাওয়া নিয়ে কে কেমন পদক্ষেপ গ্রহণ করে তাদের তাদের ক্যাটাগরিকে আলাদা আলাদা করে দেখি।

১. ট্যুরিস্ট সব সময় ভালো জায়গাতে থাকা খাওয়া নিয়ে চিন্তা করেন। কোথাও বেড়াতে গেলে নামী-দামী আলিশান হোটেকগেস্ট হাউজে থাকতে চায়।

ট্রাভেলার যেখানেই রাত সেখানেই কাইত এমন চিন্তা ভাবনা করেই ভ্রমনে বের হয়থাকা  খাওয়া নিয়ে বেশি গুরুত্ব না দিয়ে ভ্রমণে বেড়িয়ে পড়ে।

২. ট্যুরিস্টরা কোথাও ভ্রমনে গেলে ব্যাগিং, প্যাকিং করে থাকেন আনেক বেশি। ট্যুরিস্টরা দুইদিনের জন্য ভ্রমণে গেলে লাগেজ নিয়ে বের হয়।

ট্রাভেলার সাধারণত কোথাও গেলে ছোট একটা ব্যাগে অতি প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে বেড়িয়ে পরে।

৩. ট্যুরিস্টরা সাধারনত কোথাও যাওয়ার আগেই হোটেল বুকিং দেয় অথবা গিয়ে ভালো আরামদায়ক ভাবে থাকতে পছন্দ করেন।

ট্রাভেলাররা আগে-ভাগে হোটেল বুকিং দেয় না ভ্রমণে বেড়িয়ে পড়েনআরামদায়ক পরিবেশ তাদের কাম্য নয়। একটা ব্যবস্থা হলেই হয়।

৪. ট্যুরিস্টরা সাধারণত একা ভ্রমণে বিরক্ত বোধ করেন। যেখানেই ভ্রমণে যাক এরা সাথে ভ্রমণ সঙ্গী পছন্দ করেন।তবে উত্তম ভ্রমণ সঙ্গী ভ্রমণ আনন্দকে বাড়িয়ে দেয় বহুগুনে।

ট্রাভেলাররা বেশির ভাগ সময়ে একা একাই ঘুরতে বেশি পছন্দ করেন। তাদের সঙ্গী খুব কমই থাকেন। তবে বর্তমানে বাজেট ট্যুর দিতে অনেক ট্রাভেলার এক সাথে একটা ট্রাভেল গ্রুপের সাথে ভ্রমণ করে থাকে।

৫. ট্যুরিস্টরা ভ্রমণে গেলে ব্যাগে বাহারি সব খাবার নিয়ে যায়সৌখিনতার ভরপুর থাকে তাদের ব্যাগ। আপনি দেখলেই বুঝতে পারবেন তিনি একজন ট্যুরিস্ট। মনে প্রশ্ন জাগে কিভাবে বুজবেন। ট্যুরিস্টরা ঘুরতে গেলে সাথে বই,খাতা ,নোট বুকনা নিয়ে আইপ্যাড ও ল্যাপটপ নিয়ে নযায়। এগুলো ছাড়া তার চলেই না।

অন্যদিকে ট্রাভেলারের ব্যাগে এগুলোর পরিবর্তে থাকে নোট বুক, বই । যেখানে সে বিভিন্ন স্থানের তথ্য লিখে রাখতে পারে।

৬. ট্যুরিস্টরা বাজেট ট্যুর একদমই পছন্দ করেন না। তারা যেখানেই যাবে আনলিমিটেড খরচ করবে।ট্রাভেলারদের সব ট্যুরই বাজেট ট্যুর। ট্রাভেলাররা ট্যুরে বিলাসিতা খুঁজে না।

৭. ট্যুরিস্টরা ঘুরতে গেলে মোবাইল নেটওয়ার্ক নিয়ে বেশি চিন্তা করে। ফোনে সিগন্যাল বার বার চেক করে।ট্রাভেলাদের নেটওয়ার্ক নিয়ে তেমন মাথা ব্যাথা নেই। নিজ থেকেই সিগন্যাল এয়ারপ্লেইন মোডে রাখতে চায়। কারণ ট্রাভেলারদের গন্তব্যই থাকে দুর্গম জায়গাতে।

৮. টুরিস্টরা ভ্রমণে কস্ট কম ঝুকিহীন প্লেস গুলো বেছে নেয়। নিজের মতন ফ্রি মুডে সময় কাঁটাতে পারলেই হল।ট্রভেলাররা সব সময় নতুনত্ব খুঁজেপ্রকৃতির খুব কাছে চলে যেতে চায়। দুর্গম সব জায়গাতে যেতে চায় ট্রাভেলাররা।

৯. ট্যুরিস্টরা ভ্রমণে গেলে সব সময় টাইম মেনে খাবার খেতে অস্থির থাকেট্যুরিস্টরা খাবারের দিকে বেশি সময় ও মনোযোগ দিয়ে থাকে।

ট্রাভেলাররা খাবারের বিষয়ে এত সিরিয়াস থাকে নাপেটের ক্ষুদা দূর করতে যতটুকু দরকার তা হলেই হল। নির্দিস্ট কোন মেনু দরকার হয়না।

১০. ট্যুরিস্টরা বেশির ভাগই স্টাইল করে ছবি নিয়ে ট্যুর সমাপ্ত করতে পারলেই হয়। ট্যুরিস্টদের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা তেমন দরকার হয় না। তাদের তোলা ছবিতে নিজেদের ছবিই সব থাকে,প্রকৃতির ছবি তেমন একটা থাকে না। ট্যুরিস্টরা কি আভিজ্ঞতা অর্জন হল সে নিজেও বলতে পারবেনা। একজন ট্যুরিস্ট কোথাও গেলে অন্যদের কাছে পরামর্শ নিয়ে যেতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।

ট্রাভেলারদের ভ্রমনের মূল কথা হল অভিজ্ঞতা অর্জন করা। নিজেই অভিজ্ঞতা আবিষ্কার ক্রেন।ট্রাভেলার কারো কাছে কিছু শুনে ভ্রমণ বের হয়না।  নিজে অভিজ্ঞতা অর্জন করে তারপর নিজেই পরে ট্যুরিস্টদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে। ট্রাভেলারদের ছবিতে নিজেদের ছবি কম থাকে, পোশাকের সৌন্দর্য কম থাকেপ্রকৃতির ছবি বেশি থাকে।


ট্রাভেলার দের মন মানসিকতা থাকে উদার,তারা সহজেই অন্য ট্রাভেলারদের আপন করে নিতে যানে। প্রকৃত ট্রাভেলাররা অধিকাংশই খাই খাই স্বভাবের হয় না,তারা প্রকৃতি প্রেমী তাই প্রকৃতির খুব কাছে চলে যায়। উপভোগ করে সৌন্দর্য, অভিজ্ঞতা কে করে প্রখর। যারা শখের বশে হঠাৎ ঘুরতে যায় তারা আসলে প্রকৃতির সাথে নিবিড় সম্পর্ক গড়তে পারে না। তারা ভ্রমণ কে একটা নতুন জায়গায় যাওয়া পর্যন্ত বুঝে। বাজেট ট্যুরে সবটাই নিজে খাওয়া আর বিলাসিতা করার হিসাব করে। তাই যখনই ট্যুরে যাবেন আপনি ট্যুরিস্ট না ট্রাভেলার বুঝে। ইভেন্ট এ অংশগ্রহণ করুন। 

আশা করি এই পোস্টটি পড়ে বুঝতে পারবেন ট্যুরিস্ট আর ট্রাভেলার এর পার্থক্য কিআপনি কি ট্যুরিস্ট হিসেবে ভ্রমণ করছেন নাকি ট্রাভেলার হিসাবে ট্যুরে যাচ্ছেন আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন। সেই অনুযায়ি আপনি আপনার ট্যুর সিলেক্ট করে ট্যুরে গেলে আশা করি সমস্যা হবার কথা না। আপনি ট্রাভেলারদে সাথে বাজেট ট্যুরে কনফার্ম করে ট্যুরিস্টের মতন সুবিধা নিতে চাইবেন না। তাই একা হোক বা গ্রুপের সাথে হোক যেখানেই ভ্রমণ করবেন ট্যুরিস্ট আর ট্রাভেলার এই বিষয়টি মাথায় রেখে আপনি আপনার ট্যুর প্রস্তুত্তি নিতে পারেন। আবার ও বলছি ট্যুরিস্ট আর ট্রাভেলার কখনো এক কথা হতে পারে না।



মো: শওকত আলী 

স্বপ্নবাজ বিডি ট্রাভেলস (ফাউন্ডার এডমিন)

Saturday, March 4, 2023

কৈলাশ পর্বত ও তার রহস্যময় বিবরণ

কৈলাশ অর্থ শিব লোক বা শিবের বাসস্থান রুপে বর্ণিত হিমাচলের উত্তরস্থ পর্বত বিশেষ।



কৈলাস পর্বত এর অবস্থানঃ

তিব্বতের পশ্চিম পাশেগ্যাংডিস পর্বত শ্রেনীর বুকে পিরামিডের মতন দাঁড়িয়ে আছে কৈলাস পর্বত। গ্রানাইট ও চুনাপাথরের তৈরি যে পর্বতের পাদদেশে বয়ে গেছে রাক্ষসতাল হ্রদ ও মানস সরোবর।

হিন্দু ধর্মীয় পুরানে কৈলাশ পর্বতকে শিবের “লীলাধাম” বা আবাসস্থল বলা হয়। তাদের মতে সেখানে দেবতা যমদূত থাকে। অনেকে হিন্দুদের মতে শিব ও তার সহধর্মিনী দূর্গা এবং কার্তিক-গনেশ ও শিবের অনুসারিরা কৈলাশে বাস করেন। কালো পাথরের এই পাহাড়কে প্রাচিন কাল থেকেই পৃথিবীর স্তম্ভ মনে করা হয়। সমতল থেকে এর উচ্চতা প্রায় ২২ হাজার ফুট ।

কৈলাশ এমনি এক পাহাড় যেখানে এখনো কোন মানুষের পা পড়েনি, যদিও কৈলাশ পর্বত এভারেস্ট থেকে অনেক নিচু পাহাড় তবুও কোন পর্বত আরোহী এখনো কৈলাশে আরোহণ করতে পারে নাই। এভারেস্ট পর্বতের উচ্চতা ৮ হাজার ৮৪৯ মিটার এর মতন হলেও এর চুড়ায় পর্বত আরোহীদের পা পরেছে ঠিকইকিন্তু এভারেস্টের চেয়ে কম উচ্চতাসম্পন্ন পর্বত কৈলাশে এখনো অব্দি কেউ উঠতে পারেনি। কৈলাশ পর্বতের উচ্চতা মাত্র ৬ হাজার ৬৩৮ মিটার। এভারেস্ট থেকে ২০০০ মিটার ছোট হওয়া সত্বে ও এখন পর্যন্ত কোন পর্বত আরোহী কৈলাশ এর চুড়ায় ওঠতে সক্ষম হয়নি। তবে পর্বত আরোহীরা কেন কৈলাশে উঠতে সক্ষম হয়নি তার রহস্য আজও রহস্যই রয়ে গেছে। এখনো এই রহস্যের কোন সমাধান মেলেনি। কৈলাশ পর্বত তাই এখন পর্যন্ত মানুষের কাছে রহস্যময় অজানাই রয়ে গেল। প্রাকৃতিক এক বিস্ময় লুকিয়ে আছে কৈলাশ পর্বতের মাঝে। কৈলাশ হিন্দু ধর্মের তীর্থস্থান বলা হয়ে থাকে।

তবে যারা কৈলাশে পর্বত আরোহী হয়ে অঠার জন্য চেষ্টা করেছেন তাদের বর্ণনা মতে আজব সব কান্ড ঘটে কৈলাশ এ ওঠার পথে। কিছুদূর উঠার পরই প্রকৃতি তার ভয়াবহ রুপ দেখাতে শুরু করে। প্রচন্ড ঝড় শুরু হয়বড় পাথরের টুকরো তেড়ে আসে, হঠাৎ করে পা পিছলে পড়ে যায়। শান্ত প্রকৃতি তার আশান্ত ভৌতিক রুপ ধারন করে। এ পর্যন্ত যারা কৈলাশ পর্বতে আরোহণ করেছেকৈলাশের চূড়ায় ঊঠার চেষ্টা করেছে সবার সাথেই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে গেছে। অনেকের বর্নণা মতে প্রায় সময়ে শরীরের পরিবর্তন ঘটে দ্রুতশরীরের চুল,হাত-পায়ের নখ স্বাভাবিকআযে হারে বাড়ে ,কৈলাশে ১২ ঘণ্টা থাকলে নাকি তার দ্বিগুন পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। কিছুদূর ওঠার পরই শরীরের অঙ্গ-প্রতঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দেয়। অনেক সময় শরীরে অকালবার্ধক্য  চলে আসে। দিনের বিভিন্ন সময়ে নাকি কৈলাশের রং পালটে যায়। সেই সাথে বদলে যায় কৈলাশের ভূ-প্রকৃতি। এই রকম হাজারো বিস্ময়ের ধারক ও বাহক হয়ে রহস্যময় ভাবে দাঁড়িয়ে আছে কৈলাশ পর্বত। যদিও এই বিস্ময়েরকোন  বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা এখনো পাওয়া  যায়নি।

কৈলাশ পর্বতের চূড়ায় কোন বরফ জমে না। কৈলাশ পর্বত স্বাভাবিকের তূলনায় অনেক খাড়া হওয়াতে এর চূড়ায় কোন বরফ জমে থাকতে পারে নানিচে পরে যায়। সেই বরফ গলে নদী গুলোর উৎপত্তি হয়। খরখড়ে  মরুভূমির মত স্থানে শ্বেত  শুভ্র পর্বত কৈলাশ দাঁড়িয়ে আছে। কৈলাশকে হিমালয়ের প্রথম ও প্রধান রেঞ্জ পর্বত ও বলা হয়।

যদিও এখনো কৈলাশের চূড়ায় কেউ ওঠেনিতবে কৈলাশের ৫০ কিলোমিটার ট্রাকিং এড়িয়ায় লাখ লাখ তীর্থযাত্রী হাজার হাজার বছর ধরে কৈলাশ পর্বতের আশপাশে ঘুরছে সুখী হওয়ার আশায়। অনেকেই আবার প্রনাম জানিয়ে যাচ্ছে।

তবে কোথাও কোথাও জানা যায় তিব্বতের প্রচলিত প্রাচিন কিংবদন্তি গুরু মিলারেপাই শুধু পা রাখতে পেরেছিলেন কৈলাসের চূড়ায়। ফিরে এসে তিনি সবাইকে নিষেধ করেছিলেন কৈলাস জয়ে যেতে। কারণ হিসাবে তিনি বলেন যে একমাত্র সেই মানুষ এই পাহাড়ের চুড়ায় যেতে পারবে যার গায়ে চামড়া নেই। আধুনিক পর্বত আরোহীরা ও বলেছেন কৈলাস পর্বত জয় করা অসম্ভব। তবে এর কারণ আজও অজানা।

রহস্যকে আরো গভীর করে তোলে কৈলাশের গায়ে বরফ ও পাথরের মেলবন্ধন তৈরি হওয়া স্বস্তিকা ও ওঁ চিহ্ন। গুগল আর্থের মাধ্যমে তোলা ছবির মাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। যে খানে দেখা যায় কৈলাশের বিশেষ কোন জায়গায় আলো-ছায়া মিলে সৃস্টি করে হাস্যরত শিবের মুখাবয়ব।

যারা কৈলাশের আরোহণ করতে চেয়েছেন তাদের সাথে কি ঘটেছেঃ

যারা কৈলাসে আরোহণ করতে চেয়েছে তাদের অনেকের সাথে অনেক ধরনের ঘটনা ঘটেছে। অনেককেই দেখা গেছে পর্বতের চূড়ার কাছাকাছি ছুটে গেছে। কিন্তু তাদের মাঝে কেউ ফিরে আসতে পারেনি। তাঁরা কারা ছিল বা তাদের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা জানা যায়নি। দুইজন প্রখ্যাত পর্বত আরোহী রটালেজ ও উইলসন বলেন,  একেবারে কাছ থেকে কৈলাশ দেখে মগ্ধ হয়ে রটালেজ ও উইলসন সিদ্ধান্ত নেন কৈলাশের চূড়ায় ঊঠার। অভিযানের জন্য বেছে নিয়েছেন অভিজ্ঞ শেরপা সেঁতানকে । বেছে নিয়েছিলন কৈলাশ শৃঙ্গে উঠার নতুন পথ। রটালেজ বিশেষ কাজে ফিরত আজলেও ঊইলসন ও শেরপা সেতান প্রস্তুতি নেন। এক রোদ উজ্জল ঝলমলে সকালে কৈলাস পর্বতের উত্তর-পূর্ব দিয়ে গিরিশিরা দিয়ে শিখরের দিকে এগিয়ে চলে তাঁরা। পৌছে ও গিয়েছিলেন গিরিশিরিটার মাঝখানে। কিন্তু গিরিশিরিটির মাঝে অবস্থিত বড় বোল্ডারের কাছে পৌছানোর পর পরই বদলে যায় আবহাওয়া। ঘন অন্ধকার ঘিরে ফেলে কর্নেল উইলসন ও শেরপা সেতারকে। এই দুই পর্বত আরোহীর উপর উত্তাল বাতাস বাজপাখির মতন তাদের ঊপর ঝাপিয়ে পড়ে। বাতাসের ঝপটায় কয়েকশ ফিট নিচে ছিটকে পড়ার উপক্রম হয় এই দুই পর্বত আরোহীর। পরিস্থিতি সামলে তাঁরা বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছিলেন পর্বতের চূড়ায় উঠার। কিন্তু সম্ভব হয়নিসেই বিশেষ বোল্ডারটির সামনে আসতেই বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কখনো প্রবল তুষারপাতকখনো ঘন কালো মেঘকখনো প্রবল বাতাসের বাঁধার উপস্থিতিতে ফিরে আসতে হয়েছে তাদের। রহস্যময় এই জায়গাটা পারি দেবার সকল চেষ্টা বিফলে গেছে। বাধ্য হয়ে হাল ছেড়ে দিয়ে ভারতে ফিরে আসেন উইলসন। এভাবেই এখন পর্যন্ত কৈলাশ পর্বত মানুষের কাছে আজও রহস্যময় রয়ে গেছে।



মোঃ শওকত আলী 

স্বপ্নবাজ বিডি ট্রাভেলস (ফাউন্ডার এডমিন) 

 

Featured Post

লালাখাল নৈসর্গিক সৌন্দর্যময় এক পর্যটন কেন্দ্র

  লালাখালঃ লালাখাল সিলেট শহর থেকে প্রায় ৩৫ কি.মি দূরে অবস্থিত।  একটি পর্যটন কেন্দ্র। জৈন্তাপুর পুর উপজেলায় একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। ভারত...

Popular Contain